অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসবি,নেত্রকোনা হাফিজুল ইসলাম বলেন,ইতোমধ্যে ঘটনার বিষয়ে নেত্রকোনা মডেল থানায় মামলা রুজু হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা একজনকে গ্রেফতার করেছেন। আইন থেকে কেউই বাইরে নয়—সমস্ত আসামিকে দ্রুতই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
নেত্রকোণায় জমি বিরোধে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
শহীদুল ইসলাম নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণা সদর উপজেলার মেদনী ইউনিয়নের জঙ্গল বড়ওয়ারী গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় মর্জিনা আক্তার (২২) বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় মর্জিনার স্বামী হৃদয় মিয়া নেত্রকোণা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্বামী হৃদয় মিয়া বলেন,আদালতে বিচারাধীন জমি নিয়ে বিরোধের জেরে নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ছয়জন তাদের দখলীয় জমিতে স্কেভেটর নিয়ে প্রবেশ করে। এ সময় আমার শাশুড়ি সাফিয়া বেগম ও স্ত্রী মর্জিনা বাঁধা দিলে বিবাদীরা লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করে। হৃদয় মিয়া ঘটনাটি ভিডিও করার চেষ্টা করলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে মর্জিনার গায়ে গ্যাস লাইট দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার শরীরের দুই হাত, পিঠ, কোমর ও পায়ের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় এবং যাওয়ার আগে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
দগ্ধ মর্জিনা জানান, তার মায়ের জমি দখলের চেষ্টা চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন, বাবর, নাজমুল, তুলা মিয়া ও ইউসুফ তার ওপর হামলা চালায়। পিছন থেকে বাবর আগুন লাগিয়ে দেয় এবং অন্যরা তাকে চেপে ধরে রাখে। আগুন দেওয়ার পর হামলাকারীরা দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায়। পরে তিনি নিজেই দরজা খুলে বাইরে বের হন। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান।
মর্জিনার মা সাফিয়া বেগম বলেন, আমার সাফকাউলার দলিল থাকা সত্ত্বেও তারা জমি দখল করতে আসে। প্রতিবাদ করায় আমাকে টেনে নিয়ে মারধর করে, কোমর ভেঙে দেয় এবং আমার মেয়েকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করে। তিনি আরও জানান, তার ছোট নাতনীকে দেখাশোনার মতোও এখন কেউ নেই।
ফজলুল বারী কাজল বলেন, মর্জিনা ছোটবেলা থেকে আমার বাড়িতে পালিত মেয়ের মতো ছিল। বড় হলে আমি তাকে বিয়ে দিই। এখন সে তার বাবার বাড়িতে থাকে, ছোট একটি বাচ্চা আছে, আর্থিক অবস্থাও খুব দুর্বল। আমি মাঝে মাঝে তাদের সাহায্য করি। সম্প্রতি তার বাবার জমি দখলের জন্য স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি উৎপাত শুরু করেছে। তারা কাগজ দেখাতে বললে হামলা চালায়। মর্জিনার স্বামীকে মারতে গেলে সে বাধা দিতে এগিয়ে আসে। তখন দুর্বৃত্তরা তাকে মারধর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। তার শরীরের প্রায় ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে, জীবন-মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছে, আর তার ছোট বাচ্চাটির দেখাশোনারও কেউ নেই। আমি চাই, মর্জিনা সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক। এ ন্যক্কারজনক ঘটনার কঠোর বিচার চাই, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসবি,নেত্রকোনা হাফিজুল ইসলাম বলেন,ইতোমধ্যে ঘটনার বিষয়ে নেত্রকোনা মডেল থানায় মামলা রুজু হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা একজনকে গ্রেফতার করেছেন। আইন থেকে কেউই বাইরে নয়—সমস্ত আসামিকে দ্রুতই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মন্তব্য