মেগা প্রকল্পের সরঞ্জাম নিয়ে একদিনেই মোংলা বন্দরে ভিড়েছে রাশিয়ার দুই বাণিজ্যিক জাহাজ। রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেশিনারিজ মালামাল নিয়ে রবিবার জাহাজ দুইটি বন্দরের ৭ ও ৮ নম্বর জেটিতে ভিড়েছে।

মেগা প্রকল্পের সরঞ্জাম নিয়ে একদিনেই মোংলা বন্দরে ভিড়েছে রাশিয়ার দুই বাণিজ্যিক জাহাজ। রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেশিনারিজ মালামাল নিয়ে রবিবার জাহাজ দুইটি বন্দরের ৭ ও ৮ নম্বর জেটিতে ভিড়েছে।

রবিবার (২৯ জানুয়ারী) দুপুর ৩টা ১৬ মিনিটের সময় বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে ১হাজার ৪শ' দশমিক ৪২ মেট্রিকটন মেশিনারিজ পণ্য নিয়ে নোঙ্গর করেছে লাইব্রেরিয়ান পতাকাবাহী “এমভি আনকাসান” নামের জাহাজ। একই সময়ে ৩৬ মিনিটের ব্যাবধানে বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে পানামা পতাকাবাহী ‘সাপোডিলা’ নামের আরো একটি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙ্গর করেছে। এই জাহাজ দুইটিতে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৯৭৯ প্যাকেজে মোট ১ হাজার ৯১৮ দশমিক ৪৬৩ মেট্রিক টন মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ আনা হয়েছে।
এদিন দুপুরে একই সাথে বন্দরের হারবাড়িয়া এলাকার ৫, ১২ ও ১৩ নম্বর বয়ায় নঙ্গর করেছে ক্লিংকার ও সার সহ আরো ৩টি বাণিজ্যিক জাহাজ। রবিবার দুপুরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ ভেনুয়াটু পতাকাবাহী “এমভি আনকা সান” জাহাজের শিপিং এজেন্ট মেসার্স কনভেয়ার শিপিং লাইন্স এর খুলনাস্থ ম্যানেজার (অপারেশন শিপিং) সাধন কুমার চক্রবর্তী বলেন,
১ হাজার ৯৭৯টি প্যাকেজে ১হাজার ৪০০ দশমিক ০৪২ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে ২৭ ডিসেম্বর রাশিয়ার নবরস্তি বন্দর থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দোশ্যে ছেড়ে আসে। রোববার দুপুর সোয়া ৩টায় জাহাজটি বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে এসে নোঙ্গর করে। পরে সে সব পণ্য খালাস প্রক্রিয়া শুরু হয় দুপুরের পালা থেকেই। তিনি আরও বলেন, তাদের অধীনে অধিকাংশ পণ্য রাশিয়ান জাহাজে বোঝাই করে রুপপুর পারমাবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সরঞ্জম আনা হয়েছে।

অন্যদিকে, একই সময় রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেশিনারি পণ্য নিয়ে রাশিয়ার সেন্টপিটারভার বন্দর থেকে আরো একটি লাইব্রেরিয়ার পতাকাবাহী“এমভি সাপোডিলা” নামক বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ আসে এ বন্দরে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে রবিবার দুপুরের পর বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে নোঙ্গর করে। এই জাহাজে ৪শ' ৩৬ প্যাকেজে ৫শ ১৮ দশমিক ৪২১ মেট্রিক টন রুপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেশিনারি পণ্য রয়েছে বলে জানায় এ জাহাজের শিপিং এজেন্ট ইন্টারপোর্টের ম্যানেজার মোহাম্মদ ওয়াসিম।

বন্দর জেটিতে নোঙ্গরের পর পরই জাহাজ থেকে দুপুরের পালা থেকেই পণ্য খালাস শুরু হয়। এসব পণ্য খালাস হতে সময় লাগবে ২/৩ দিন। জাহাজ থেকে পুরোপুরি খালাস হবার পর আগামী ৫/৬ দিনের মধ্যে সেগুলো সড়ক ও নৌ পথে পাবানার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রুপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে বলে জানায় মোংলা বন্দরের শ্রমিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান (ইষ্টিভিডরস) কোম্পানী মেসার্স অভিরত এজেন্সির স্থানীয় ম্যানেজার মো. রুহুল আমিন।

শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোংলা বন্দর দিয়ে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ বোঝাই জাহাজ আসছে মোট ৪২টি। এ ৪২টি বিদেশী জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হয়েছে ৭০ হাজার ৪৪২ দশমিক ৪৬৩ মেট্রিক টন বলে জানিয়েছে বন্দরের হারবার বিভাগ।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট আমদানী-রপ্তানীকারক ব্যাবসায়ীরা বলেন, এ বন্দরের প্রতি বর্তমান সরকারের সু-দৃষ্টি আর সহায়তায় দেশের নির্মাণাধীন প্রায় সব কটি মেগা প্রকল্পের মালামাল এখন বিশেষ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আধুনিক পদ্ধতিতে এ বন্দরের দক্ষ জনবল দিয়ে এসব পণ্য খালাস হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এই বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।