শেখ হাসিনার মামলার রাজসাক্ষী চৌধুরী মামুন ট্রাইব্যুনালে, অপেক্ষা রায়ের 

সর্বমোট পঠিত : 32 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

রায় ঘোষণা আদালত কক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বিটিভি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সাজা হলে আইন অনুযায়ী আত্মসমর্পণ করলে সুপ্রিমকোর্টে আপিলের সুযোগ পাবেন আসামিরা। 

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ৩ আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা আজ। বেলা ১১টায় বসবে বিচারপতি গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল-১।

এ উপলক্ষে সকাল ৯টার কিছুক্ষণ পর কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে মামলার রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে।

আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক। তাদের অনুপস্থিতিতেই আজ ঘোষণা হবে এ মামলার রায়। বছরখানেক ধরেই কারাগারে রয়েছেন সাবেক আইজিপি। 

রায় ঘোষণা আদালত কক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বিটিভি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সাজা হলে আইন অনুযায়ী আত্মসমর্পণ করলে সুপ্রিমকোর্টে আপিলের সুযোগ পাবেন আসামিরা। 

জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় প্রথম রায় ঘোষণা আজ। সাড়ে ৩ মাসের আনুষ্ঠানিক বিচার শেষে হচ্ছে রায় ঘোষণা।

প্রসিকিউশন জানায়, মারণাস্ত্র ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশসহ আসামিদের বিরুদ্ধের পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণ হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল আইনের ২০ ধারা অনুযায়ী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড চান তারা।

পাশাপাশি আইনের নতুন সংশোধনী অনুযায়ী আসামিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে শহীদ পরিবারসহ ভুক্তভোগীদের জন্য ক্ষতিপূরণ চায় রাষ্ট্রপক্ষ। তবে ট্রাইব্যুনাল আইনের ১৫ ধারা অনুযায়ী সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে তার সাজা হওয়া বা খালাসের বিষয়টি আদালতের ওপর নির্ভর করছে।

পলাতক শেখ হাসিনা ভারতে বসে বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় প্রসিকিউশন বলছে, রায়ে সাজা হলে আপিলের সুযোগ রয়েছে তার। তবে তার আগে আত্মসমর্পণ করত হবে। 

প্রসিকিউশন জানায়, রায় ঘোষণার সময় বিচারকদের সরাসরি দেখা না গেলেও অডিও শুনতে পাবেন দর্শকরা। 

এরআগে গত ২৩ অক্টোবর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। সবশেষ ১৩ নভেম্বর আদালত রায়ের জন্য ১৭ নভেম্বর তারিখ ঠিক করেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। ওইদিনই ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়।

আন্দোলন ঘিরে হত্যাকাণ্ডসহ মোট পাঁচ অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। 

শেখ হাসিনার মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ মোট ৮১ জনকে সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। তাদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ মোট ৫৪ জন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তিন আসামির বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, নির্যাতন, ষড়যন্ত্র, উসকানি ও ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়–এই পাঁচটি অভিযোগে বিচার হয়েছে। অভিযোগগুলো হলো– গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে চালানো হত্যাকাণ্ড, হেলিকপ্টার ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ, রংপুরে ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা, চানখাঁরপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় হত্যা ও লাশ পোড়ানো।

শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গত কদিন ধরেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত। কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নানা পক্ষে নাশকতা মোকাবিলায় কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি