ইউনাইটেডের দুই ছবি

নিজ দেশে পাত্তা পায় না, আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেখায় দাদাগিরি

সর্বমোট পঠিত : 54 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

ইউনাইটেড তিনটি গোলই পেয়েছে প্রথমার্ধে। ম্যাচের ৩০ মিনিটে হ্যারি মাগুয়েরের বানিয়ে দেওয়া বলে হেড করেন মানুয়েল উগার্তে। সেখান থেকে সুবিধাজনক পজিশনে বল পেয়ে আরেক হেডে ইউনাইটেডকে এগিয়ে (১-০) দেন কাসেমিরো।

চলতি মৌসুমের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড যেন কল্পকাহিনির রহস্যময় চরিত্র নিয়ে হাজির হয়েছে! স্কোয়াড একই, কোচ একই- কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন প্রতিযোগিতায় ভিন্ন রূপে হাজির হচ্ছে ম্যান ইউনাইটেড। নিজ দেশের টুর্নামেন্ট প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে সময় পার করছে ইংলিশ ক্লাবটি। সেই ইউনাইটেডই কিনা আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেখাচ্ছে দাদাগিরি! ইউরোপা লিগে ছুটছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। সে গতির ধারা অব্যাহত রেখেছে সেমিফাইনালেও।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে টুর্নামেন্টের শেষ চারের প্রথম লেগে স্প্যানিশ ক্লাব আথলেতিক বিলবাওকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ইউনাইটেড। একইসঙ্গে ফাইনালের পথেও অনেকটা এগিয়ে গেছে রুবেন আমোরিমের দল।

ইউনাইটেড তিনটি গোলই পেয়েছে প্রথমার্ধে। ম্যাচের ৩০ মিনিটে হ্যারি মাগুয়েরের বানিয়ে দেওয়া বলে হেড করেন মানুয়েল উগার্তে। সেখান থেকে সুবিধাজনক পজিশনে বল পেয়ে আরেক হেডে ইউনাইটেডকে এগিয়ে (১-০) দেন কাসেমিরো।

পাঁচ মিনিট পর পেনাল্টি বক্সের ভেতর রাসমুস হইলুনকে ফেলে দিয়ে লাল কার্ড দেখেন বিলবাওয়ের স্প্যানিশ ডিফেন্ডার দানিয়েল ভিভিয়ান। একদিকে ১০ জনে পরিণত হয় স্প্যানিশ ক্লাবটি, পাশাপাশি স্পটকিকে ব্রুনো ফের্নান্দেসের গোলে পিছিয়ে পড়ে ২-০ ব্যবধানে। বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে আরেকটি গোল করে ব্যবধান ৩-০ করেন ফের্নান্দেস। দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোল না হলেও বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ইউনাইটেড।

অথচ এই ইউনাইটেডই কিনা প্রিমিয়ার লিগে হযবরল পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে যাচ্ছে একের পর এক ম্যাচে। চলতি মৌসুমে লিগে এখন পর্যন্ত ৩৪ ম্যাচ খেলেছে রেড ডেভিলরা। এর মধ্যে মোটে ১০টি ম্যাচ জিতেছে ইউনাইটেড, আর হেরেছে ১৫টিতে। এর প্রভাব পড়েছে পয়েন্ট তালিকাতেও, ২০ দলের লিগে ১৪ নম্বরে আমোরিমের শিষ্যরা।

সেই ইউনাইটেডেই ইউরোপা লিগে এখন পর্যন্ত অপরাজিত! এবারের টুর্নামেন্টে আর কোনো দলের অপরাজিত থাকার কীর্তি নেই। শিরোপা থেকে মাত্র দুই ধাপ দূরে তারা।

পুরো মৌসুমের হিসেব না করে যদি শুধু চলতি বছরের হিসেবটা টানা যায়, তাতেও ইউনাইটেডের দুটি ভিন্ন রূপ আরও বেশি করে স্পষ্ট হবে। এ বছর ১৫টি লিগ ম্যাচ খেলে ৪ জয়ের বিপরীতে ৬টিতেই হেরেছে ইউনাইটেড, আর গোল করেছে ১৮টি। অন্যদিকে ইউরোপা লিগে এ বছর খেলা ৭ ম্যাচেই তার চেয়ে বেশি গোল (১৯টি) করেছেন ফের্নান্দেস-গার্নাচো-হইলুনরা।

গতকাল যে বিলবাওয়ের জালে ৩ গোল দিয়েছে, ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ঘরের মাঠে স্প্যানিশ ক্লাবটির এটাই সবচেয়ে বড় দুই পরাজয়ের একটি। এর আগে ২০০৯ সালে এ টুর্নামেন্টেই ঘরের মাঠ সান মামেসে ওয়ার্ডার ব্রেমেনের কাছে একই ব্যবধানে হেরেছিল বিলবাও।

একদিকে প্রিমিয়ার লিগে নিজেই বিপর্যস্ত ইউনাইটেড ইউরোপা লিগে প্রতিপক্ষকে লজ্জার উপহার দিচ্ছে- দলের এমন ভিন্ন আচরণের ব্যাখ্যা যেন নিজেও খুঁজে পাচ্ছেন না আমোরিম। ম্যাচ শেষে ইউনাইটেড কোচ বলেছেন, ‘এটা ব্যাখ্যা করা কঠিন। (প্রিমিয়ার লিগে) গত কয়েকটি ম্যাচে আমরা অবশ্য উন্নতি করেছি। আমি শুধু ম্যাচের ফল দেখি না। এমন কিছু ম্যাচ আমরা হেরেছি, যেখানে আমরা খুব ভালো খেলেছিলাম। আবার এমন কিছু ম্যাচ জিতেছি, যেখানে ভালো করতে পারিনি। মাঝে মধ্যে ম্যাচ জিততে ভাগ্যের ছোঁয়াও লাগে।’

আমোরিম যোগ করেন, ‘আজকের ম্যাচটার কথাই যদি ভাবেন, ওরা (বিলবাও) প্রথম ৩০ মিনিটে গোল করার বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু গোল করতে পারেনি। আমরা যখন গোল করলাম, নিজেদের খেলাটা আরও ভালোভাবে খেলতে পারলাম। আমরা এই প্রতিযোগিতার শিরোপা জিততে পারি। অন্যদিকে প্রিমিয়ার লিগে একটার পর একটা ম্যাচে ভুগছি। চোট সমস্যাও সামলাতে হচ্ছে। আবার কখনো কখনো খেলোয়াড়দের জন্যও কাজটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমি জানি এটা (দলের ভিন্ন আচরণ) বুঝে ওঠা কঠিন। তবে মাঝে মধ্যে এটাই ঘটে- আমরা যেভাবে সবকিছুকে দেখি।’

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি