গত মঙ্গলবার বাউবি থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করার পর বুধবার রাতে নিজের ছেলের মাধ্যমে ফলাফল জানতে পারেন আবুল কালাম। বিষয়টি তিনি ১৪ নভেম্বর বিকেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
শেরপুরের কবি কালামের ৬৯ বছর বয়সে এইচএসসি পাস
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার পশ্চিম লঙ্গরপাড়া গ্রামের সেই কবি মো. আবুল কালাম আজাদ ৬৯ বছর বয়সে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আবারো আলোচনায় উঠে এসেছেন। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) অধীনে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রাবাজ রশিদা বেগম কলেজ কেন্দ্র থেকে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ২ দশমিক ৭৭ পেয়ে তিনি পাস করেন।
গত মঙ্গলবার বাউবি থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করার পর বুধবার রাতে নিজের ছেলের মাধ্যমে ফলাফল জানতে পারেন আবুল কালাম। বিষয়টি তিনি ১৪ নভেম্বর বিকেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
এর আগে ২০২২ সালে বাউবির বকশীগঞ্জের চন্দ্রাবাজ রশিদা বেগম উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ৬৭ বছর বয়সে জিপিএ ২.৯৫ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন আবুল কালাম। ওই সময় বিভিন্ন মিডিয়া খবর প্রকাশ হলে আলোচনায় আসেন এ কবি।
আবুল কালামের বাড়ি শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়নের পশ্চিম লঙ্গরপাড়া গ্রামে। এলাকায় তিনি ‘কবি কালাম’ নামে পরিচিত। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাঁর জন্মতারিখ ১৯৫৫ সালের ১ মার্চ। স্কুলজীবনে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করার পর পারিবারিক সংকটে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেননি। পড়াশোনার প্রতি দুর্বলতা থেকেই ২০২০ সালে বকশীগঞ্জের চন্দ্রাবাজ রশিদা বেগম উচ্চবিদ্যালয়ে বাউবির আওতাধীন এসএসসি প্রোগ্রামে ভর্তি হন। ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে একই স্কুলে এইচএসসি প্রোগ্রামে ভর্তি হন।
২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম সেমিস্টারে অংশ নিয়ে পাস করেন। এরপর ৯ আগস্ট থেকে দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাউবি কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা বাতিল করে এবং যাঁরা প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁদের অটোপাস ঘোষণা করে। এর ধারাবাহিকতায় আবুল কালাম জিপিএ ২ দশমিক ৭৭ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
এ ব্যাপারে কবি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ছোট ছেলে আনিসুর রহমানের কাছ থেকে পরীক্ষায় পাসের খবরটি প্রথম জানতে পারি। এইচএসসি পাস করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। এখন বেচেঁ থাকলে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের জন্য পড়ালেখা চালিয়ে যাবো।
তিনি বলেন, ‘পড়ালেখার প্রতি আমার ভীষণ দুর্বলতা। সব সময় সংবাদপত্র ও বই পড়ি। গান ও কবিতা লিখি। কয়েকটি উপন্যাস ও ছোটগল্প লিখেছি। এসবের পাণ্ডুলিপি যত্নের সঙ্গে সংরক্ষণ করছি।
বাউবির জামালপুরের উপপরিচালক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বাউবি যেকোনো বয়সের মানুষের পড়ালেখা করার সুযোগ করে দিয়েছে। এ জন্য বৃদ্ধ বয়সেও আবুল কালাম আজাদ তাঁর পড়ালেখা করার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পেরেছেন।
মন্তব্য