বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিখ্যাত খাবারের দেশ-বিদেশে পরিচিতির লক্ষে ’বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভাল: টেস্ট অফ বাংলাদেশ’ নামে এক বিশেষ মেলা শুরু হয়েছে রাজধানীর বনানী কামাল আতাতুর্ক পার্কে।
মুজিব’স বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যালে ৩৯টি পণ্যের মধ্যে শেরপুরের ২ পণ্য সবার নজর কেড়েছে
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিখ্যাত খাবারের দেশ-বিদেশে পরিচিতির লক্ষে ’বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভাল: টেস্ট অফ বাংলাদেশ’ নামে এক বিশেষ মেলা শুরু হয়েছে রাজধানীর বনানী কামাল আতাতুর্ক পার্কে।
এই মেলাটি বৃহস্পতিবার (৪ মে) উদ্বোধন করা হয়, এটি চলবে শনিবার (৬ মে) রাত ১১টা পর্যন্ত। এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের পর্যটকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে এই কান্ট্রি ব্রান্ডিং একটি অসাধারণ আয়োজন।
এই মেলায় ৩৯টি পণ্যের মধ্যে শেরপুরের ছানার পায়েস ও জেলা ব্র্যান্ডিং পণ্য তুলশীমালা চালের আলাদা দুটি স্টল নিয়ে অংশগ্রহণ করেছে প্রতিনিধি দল। শেরপুরের এই পণ্য দুইটি রাজধানীবাসীসহ মেলায় বিভিন্ন খাবারের স্বাদ নিতে আসা দেশ-বিদেশের দর্শকদের নজর কেড়েছে, মন ছোঁয়েছে সবার।
সারাদেশ ঘুরে ঘুরে এসব খাবারের স্বাদ নেওয়া অধিকাংশ মানুষের পক্ষে অসম্ভব, তাছাড়া এখনো দেশের ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত সব পণ্য অনলাইনে পাওয়া যায় না। তাই একই মাঠে সারাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত খাবারের সমাহার থাকায় দেশ-বিদেশের মানুষের ঢল নেমেছে।
বিশেষ করে শেরপুরের ছানার পায়েস ও জেলা ব্র্যান্ডিং পণ্য তুলশীমালা চালের কদর যেন আকাশ চুম্বী। জানা গেছে, এই মেলা সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে, কিন্তু ভিন্ন মাত্রার শেরপুরের পণ্য দুইটি অপেক্ষাকৃত আলাদা মানের হওয়ায় এবং মানুষের সমাগম বেশি থাকায় প্রতিদিন রাত ৮টার মধ্যেই স্টলে সাজিয়ে রাখা ছানার পায়েস ও তুলশীমালা চাল বিক্রি হয়ে যায়।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহির মুহাম্মাদ জাবের। টেস্ট অফ বাংলাদেশ সম্পর্কে বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন সাদেকুল আরেফিন। এই মেলোর উদ্বোধন অনুষ্ঠান ও মেলায় বসানো স্টল সমূহ পরিদর্শনের জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
শেরপুরের ছানার পায়েস নিয়ে অংশ গ্রহনকারী দলনেতা ’আওয়ার শেরপুর’-এর প্রতিষ্ঠাতা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, তারা এই মেলায় আশার চেয়ে বেশি সাড়া পাচ্ছেন। কারন হিসেবে তিনি জানান, একই মাঠে সারাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত খাবারের সমাহার থাকায় বিভিন্ন খাবারের স্বাদ নিতে আসা রাজধানীবাসীসহ দেশ-বিদেশের দর্শকদের নজর কেড়েছে, ছোঁয়েছে সবার মন। মেলায় প্রতিদিন মানুষের ঢল নামে।
এই মেলায় শেরপুরের ছানার পায়েস ও জেলা ব্র্যান্ডিং পণ্য তুলশীমালা চাল, খুলনার চুই ঝালের মাংস, চট্টগ্রামের মেজবান, ঢাকার বিখ্যাত হাজীর বিরিয়ানি, বিউটির লাচ্ছি, বাকরখানি, নান্নার বিরিয়ানি, বিসমিল্লাহর চাপ, মোস্তাকিমের চাপ, বোবার বিরিয়ানি, বরিশালের গুটিয়ার সন্দেশ, বগুড়ার দই, কুমিল্লার মাতৃভাণ্ডারের রসমালাই, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, বাগেরহাটের চিংড়ি ও সুন্দরবনের মধু, যশোরের জামতলার সাদেক গোল্লা, মৌলভীবাজারের মনিপুরী খাবার, কক্সবাজারের সী ফুড, খাগড়াছড়ির বিখ্যাত ব্যাম্বো চিকেন, বান্দরবানের মারমা ফুড, উত্তর বঙ্গের প্যালকা, পিরোজপুরের সন্ধ্যা নদীর ইলিশ, সিলেটের পানসী রেস্টুরেন্টের আখনী বিরিয়ানি, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মণ্ডা, হরেক রকমের জুস, ফুসকা, আগুন পান ইত্যাদি রয়েছে।
এছাড়া হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা, প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, শেরাটন ঢাকা, হোটেল ওয়েস্টিন ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের বিখ্যাত বাংলাদেশি খাবারের সমাহার সবার নজর কেড়েছে। মেলার বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রাখা হয়েছে বিখ্যাত বাউল শিল্পী কুদ্দুস বয়াতির গান, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি’র নানা-নাতির সংলাপ, রয়েছে গম্ভীরা, কাওয়ালি, লালন সংগীতসহ নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন।
মন্তব্য