বৈঠকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘প্রায় সময়ই আমরা জানি এই চুরি হওয়া অর্থ কোথা থেকে আসছে। তারপরও, আমরা এটিকে বৈধ লেনদেন হিসেবে মেনে নিই, কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া গ্রহণ ছাড়াই।’
অর্থ পাচার রোধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার





অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শত শত কোটি ডলারের চুরি করা সম্পদ অফশোর ট্যাক্স হ্যাভেন ও ধনী দেশে পাচার ঠেকাতে কঠোর আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামো তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) চেয়ারম্যান ফ্রাঁসোয়া ভালেরিয়ানের সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি।
এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিজ দেশ থেকে অন্য দেশে গোপনে অর্থ জমা রাখার সুযোগ রয়েছে যেসব দেশে, সেগুলো ‘ট্যাক্স হ্যাভেন’ বা করস্বর্গ হিসেবে পরিচিত।
বৈঠকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘প্রায় সময়ই আমরা জানি এই চুরি হওয়া অর্থ কোথা থেকে আসছে। তারপরও, আমরা এটিকে বৈধ লেনদেন হিসেবে মেনে নিই, কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া গ্রহণ ছাড়াই।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গ্লোবাল সাউথের দেশগুলো থেকে অফশোর নিরাপদ আশ্রয়ে এবং ধনী দেশগুলোতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার ঠেকাতে বিদ্যমান বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে, যেখানে এসব চুরি হওয়া সম্পদকে স্বাগত জানানো হয় এবং ‘সহায়তাকারীদের’ মাধ্যমে বৈধতা দেওয়া হয়।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘স্বৈরাচারী শাসনামলে প্রতি বছর ১৬ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে।’
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও আর্থিক নিয়মনীতির কঠোর সমালোচনা করেন, যেগুলো ‘চুরি হওয়া অর্থকে’ অফশোর দ্বীপপুঞ্জ বা ধনী দেশগুলোতে গচ্ছিত রাখতে সহজ করে তোলে।
ট্রান্সফারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) চেয়ারম্যান ফ্রাঁসোয়া ভালেরিয়ান অন্তর্বর্তী সরকারের চুরি হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তবে আরও কার্যকর ‘আন্তর্জাতিক সহযোগিতা’ ও শক্তিশালী আর্থিক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ফ্রাঁসোয়া ভালেরিয়ান বলেন, ‘আমাদের আরও শক্তিশালী আন্তর্জাতিক নীতিমালা ও বাস্তবায়ন দরকার।’
প্রধান উপদেষ্টা কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ‘দ্বিমুখী নীতির’ নিন্দা জানান, যারা জেনেশুনে অবৈধ অর্থ গচ্ছিত রাখে।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালকে পাচার রোধে তাদের কণ্ঠস্বর আরও জোরালো করার এবং বাধ্যতামূলক আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন করে চুরি করা অর্থ পাচার বন্ধ করতে একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম গঠনে সহায়তা করার আহ্বান জানান।
বৈঠকে ট্রান্সফারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘টিআইবি ও ইউকে চ্যাপ্টার যৌথ উদ্যোগে শেখ হাসিনার সহযোগীদের অর্জিত সম্পত্তি জব্দের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’
বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য