আয়নাঘরের লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন আমান আযমী

সর্বমোট পঠিত : 14 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

আযমী বলেন, ‌‘যখন আমার বাসায় তারা আসল তখন তাদের কাছে আমি জানতে চেয়েছিলাম আপনারা কারা, পরিচয় কী, পরিচয়পত্র দেখান। তারা আমার কথার জবাব দেননি। আমি বেশ কিছু প্রশ্ন করেছি তারা কোনো কথার জবাব দেননি। এক অফিসার আমাকে তুই করে সম্বোধন করে। আমার সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করে।


স্বৈরচার শেখ হাসিনার পতনের পর গত ৬ আগস্ট ‘আয়নাঘর’ থেকে মুক্তি পান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী। এরপর চিকিৎসা শেষে এই প্রথম গণমাধ্যমের সামনে এলেন তিনি। দিলেন আয়নাঘরে থাকার লোমহর্ষক বর্ণনা। আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন আমান আযামী।

এরপর বর্ণনা করেন কীভাবে তাকে আটক করা হয়, তার সঙ্গে কেমন আচরণ করেছিল সাদা পোশাকের বিশেষ বাহিনী। এছাড়া কীভাবে আয়নাঘরে কাটিয়েছেন, সেটিও উঠে আসে তার দেওয়া বর্ণনায়।

আযমী বলেন, ‌‘যখন আমার বাসায় তারা আসল তখন তাদের কাছে আমি জানতে চেয়েছিলাম আপনারা কারা, পরিচয় কী, পরিচয়পত্র দেখান। তারা আমার কথার জবাব দেননি। আমি বেশ কিছু প্রশ্ন করেছি তারা কোনো কথার জবাব দেননি। এক অফিসার আমাকে তুই করে সম্বোধন করে। আমার সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করে।

এক পর্যায়ে আমাকে গ্রেপ্তার করে গাড়িতে নিয়ে চোখ বেঁধে দেয়। সে সময় আমাকে ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে খুবই খারাপ ব্যবহার করে। ’

আযমী বলনে, ‌‘আমি ফিরে এসে জানতে পারলাম আমার পরিবারের ওপর তারা কী পরিমাণ নির্যাতন চালিয়েছে। আমার স্ত্রীর গায়ে হাত তুলতে চেয়েছিল তারা। এক পর্যায়ে আমার স্ত্রীকে তুলে নিতে চাইলে স্ত্রী আমার মাকে সঙ্গে নিতে বলে তখন তারা তাকে নেয়নি। এ সময় আমার বাড়ির যুবতী কাজের মেয়ের ওপর হাত চালিয়েছে। বাসার ম্যানেজার ও দারোয়ানসহ সবাইয়ের ওপর তারা হামলা চালায়। ’

তিনি বলেন, ‘আমার চোখ-মুখ বাঁধা অবস্থায় একটা জায়গায় নিয়ে গেল। তারা আমাকে পোশাক দিল। রাতের আমাকে খাবার দেয় কিন্তু খাওয়ার মতো অবস্থায় ছিলাম না। টয়লেট যেতে চাইলে তারা আমার চোখ-হাত বেঁধে নিয়ে যেত। প্রায় ৫০ কদম হাঁটার পর টয়লেটে যেতাম। ’

সাবেক এই সেনা সদস্য আরও বলেন, ‘বারবার মনে হতো তারা হয়তো আমাকে ক্রস ফায়ার করে হত্যা করবে। আমি রাতে তাহাজ্জুত পড়ে আল্লাহর কাছে শুধু কান্না করতাম, আল্লাহ আমার লাশটা যেন কুকুরদের খাদ্যে পরিণত না হয়। আমার লাশটা যেন আমার পরিবারের কাছে যায়। সব সময় এ দোয়াটাই করতাম। ’

উল্লেখ্য, সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক প্রয়াত আমির গোলাম আযমের মেজো ছেলে। ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট রাতে তাকে রাজধানীর বড় মগবাজারের বাসা থেকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি