চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম

সর্বমোট পঠিত : 66 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের চাপড়ার মোড় এলাকার মারামারির ঘটনা নিয়ে একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। এ নিয়ে তদন্ত চলছে, তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।


মোংলায় চাঁদা না দেওয়ায় এক ব্যবসায়ীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ও বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের চাপড়ার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারধরে অচেতন হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা না করার জন্য ওই ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোনে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে।

এ নিয়ে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার পরদিন আজ শনিবার সকালে মোংলা থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে।

মোংলা থানায় দেওয়া এজাহারের প্রেক্ষিতে জানা যায়, ১০ বছর ধরে সরকারি রাজস্ব প্রদানের মাধ্যমে বৈধভাবে সুন্দরবনের দুবলার চরে মাছের ব্যবসা করে আসছেন উপজেলার সোনাইলতলার মাহবুব চৌধুরী। আর যারা তাকে মারধর করে গুরুতর আহত করেছেন তারা সবাই ওই একই এলাকার প্রতিবেশী এবং তারা সুন্দরবনে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে কাকড়া ধরা, হরিণ শিকার ও বন্যপ্রাণী নিধনসহ বনের গহীনে বহু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী মাহবুব চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই তার ব্যবসার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিনিয়ত চাঁদা দাবি করে আসছিল লিটন গাজীসহ এই সন্ত্রাসী বাহিনী। চাহিদা মাফিক চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় ব্যবসায়িকভাবেও নানাভাবে ক্ষতি করে আসছিল লিটন গাজী গং। তারই প্রেক্ষিতে গত ৭ জানুয়ারি সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে দলবদ্ধ হয়ে সোনাইলতলার উলুবুনিয়া গ্রামে তার নিজ বাড়ির সামনে গিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে লিটন গাজীসহ কয়েকজন লোক। এ সময় প্রকাশ্যে চাঁদার টাকা না দিলে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না ও তাকে মারধরসহ এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ী মাহবুবের। পরে ঘর থেকে বের না হলেও দুই দিনের মধ্যে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার সময় বেঁধে হুমকি দিয়ে আসামি লিটন গং ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরের দিন ৮ জানুয়ারি রামপাল উপজেলার পেড়িখালী খেয়াঘাটে ভুক্তভোগীর রাখা মাছের ট্রলারটি চাঁদার দাবিতে আটকে রাখে এ সন্ত্রাসীরা। পরে মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ও রামপাল থানা পুলিশের সহায়তায় তাদের হাত থেকে ট্রলারটি উদ্ধারের পর এ ঘটনা নিয়ে মোংলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। গত ৯ জানুয়ারি ব্যবসার উদ্দেশে ট্রলার নিয়ে দুবলার চরে চলে যায় আহত মাহবুব। এতে সন্ত্রাসীরা আরো ক্ষিপ্ত হন।

সর্বশেষ ১ ফেব্রুয়ারি দুবলার চর থেকে মাছ নিয়ে মোংলায় আসে ভুক্তভোগী মাহবুব। ২ ফেব্রুয়ারি মাছ বিক্রি করে টাকা নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাড়ি যাওয়ার পথে পূর্ব থেকে রাস্তায় ওঁৎ পেতে থাকা লিটন গাজীসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী মাহবুবকে অতর্কিত ধাওয়া করেন। পরে জীবন রক্ষার্থে চাপড়ার মোড়ে একটি দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানে ফেলে তাকে এলোপাতাড়িভাবে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে লিটন গাজী তাকে হত্যার উদ্দেশে গলা চেপে শ্বাস রোধের চেষ্টা করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে তাকে মেরে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে কাছে থাকা মাছ বিক্রির ১ লাখ ৬ হাজার ৩০০ টাকা নিয়ে চলে যায় সন্ত্রাসীরা। ওই সময় এলাকার কয়েকজন পথচারী তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ভুক্তভোগী মাহবুব চৌধুরী বাদী হয়ে লিটন গাজী, জোবায়ের গাজী ও বাবর গাজীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৬/৭ জনকে আসামি করে মোংলা থানায় এজাহার দাখিল করেছেন।

মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের চাপড়ার মোড় এলাকার মারামারির ঘটনা নিয়ে একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। এ নিয়ে তদন্ত চলছে, তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি