‘গরিব মানুষকে কেউ চোখে দেখে না’

সর্বমোট পঠিত : 62 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ বলেন, রেজিয়া যে বয়সে ভিক্ষাবৃত্তি করছে। সেই বয়সে তার স্কুলে থাকার কথা ছিল। আমার কাছে এলে তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করবো।

যে বয়সে অন্য দুই-চারজন মেয়ের মতো রেজিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার কথা, সেই বয়সে তাকে করতে হচ্ছে ভিক্ষাবৃত্তি। বাবা রফিকুল ইসলাম হাঁপানি রোগী, তাই তিনি তেমন কোনো কাজ করতে পারেন না। এজন্য প্রতিবন্ধী মেয়েকে হুইলচেয়ারে বসিয়ে ভিক্ষা করেন। প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন রফিকুল।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবন্ধা ইউনিয়নের ঘাগরা দক্ষিণপাড়া ঘাগড়া লস্কর গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম। তার দুই মেয়ের মধ্যে রেজিয়া বড়।

জানা যায়, রেজিয়া জন্মের পর থেকেই শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। তার পরিবার গত ১০ বছর থেকে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের কাছে গেলেও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেয়নি। এমনকি একটি হুইলচেয়ার কেনার জন্য সাহায্য চেয়েও পাননি। পরে পাশের বাসার বৃদ্ধ মারা যাওয়ার পর তার ব্যবহৃত হুইলচেয়ারটি দান করেন। এরপর স্থানীয়দের পরামর্শে রেজিয়ার বাবা সমাজসেবা অফিসে গত দেড় মাস আগে লিখিত আবেদন করেন। সেখান থেকেও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সাহায্য পাননি।

রেজিয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, গরিব মানুষকে কেউ চোখে দেখে না। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি কাজ করতে পারি না। পেটের দায়ে মেয়েকে নিয়ে ভিক্ষা করতে নামছি। মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে অনেক গেছি কিন্তু তারা ভাতার কার্ডটাও করে দেইনি।

রাশেদ নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, অতিদরিদ্র রফিকুল ইসলামের থাকার কোনো ঘর ছিল না। গ্রামের কয়েকজন মিলে তার ঘর তৈরি করতে সাহায্য করেছেন। তারা ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন চালাচ্ছে। মেম্বার-চেয়ারম্যানের পেছনে ১০ বছর ঘুরেছে কিন্তু কোনো প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেয়নি।

ঝিনাইগাতী উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা মোর্শেদা আক্তার মনি বলেন, রেজিয়া ও তার বাবা এসে আমার কাছে সরাসরি তাদের প্রায়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে গেছেন। আমরা গুরুত্বের সঙ্গে রেজিয়ার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছি। সামনে যে ভাতা দেওয়া হবে আশা করছি তখন থেকেই রেজিয়া সরকারি ভাতার অন্তর্ভুক্ত হবে। এছাড়া রেজিয়ার বাবার যদি চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তাহলে সরকারিভাবে তাকে চিকিৎসা দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ বলেন, রেজিয়া যে বয়সে ভিক্ষাবৃত্তি করছে। সেই বয়সে তার স্কুলে থাকার কথা ছিল। আমার কাছে এলে তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করবো।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি