ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল-গ্যাস আসতে পারে ফেব্রুয়ারিতে

সর্বমোট পঠিত : 66 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

৩৭৭ কোটি রুপির বেশি ব্যয়ে নির্মিত বহুল প্রত্যাশিত ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিএফপিএল) আগামী মাসের মধ্যে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে জ্বালানি তেল রপ্তানি শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।


৩৭৭ কোটি রুপির বেশি ব্যয়ে নির্মিত বহুল প্রত্যাশিত ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিএফপিএল) আগামী মাসের মধ্যে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে জ্বালানি তেল রপ্তানি শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

রোববার দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক তেল পাইপলাইন আইবিএফপিএল পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে আসাম-ভিত্তিক ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থা নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেডের (এনআরএল) বিপণন টার্মিনাল থেকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) পার্বতীপুর ডিপোতে জ্বালানি বহন করবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনআরএলের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা পিটিআইকে বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক এই প্রকল্পের কৌশলগত সব কাজ ভারতের অর্থায়নে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই পাইপলাইন উদ্বোধনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।’

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ আইবিএফপিএল পাইপলাইনের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছিল।

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের বৃহত্তম ওই শোধনাগারের অন্য একজন জ্যেষ্ঠ নির্বাহী বলেন, প্রকল্পটি সত্যিকারের এক প্রকৌশল বিস্ময়। আমরা অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছি, কিন্তু দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা এবং প্রযুক্তিগত বোঝাপড়ার কল্যাণে আন্তর্জাতিক এই প্রকল্পটি দিনের আলো দেখবে।

তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সত্যিকারের বন্ধুত্বের কারণে আইবিএফপিএল সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। আর এই প্রকল্প দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশের ‘সেরা সম্পর্কের’ প্রমাণ হয়ে থাকবে।

এর আগে, ২০১৭ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে বার্ষিক এক মিলিয়ন মেট্রিক টন জ্বালানি বহনে সক্ষম এই পাইপলাইনের অর্থায়নে রাজি হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

আইবিএফপিএল প্রকল্প নির্মাণে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৭৭.০৮ কোটি রুপি। এর মধ্যে পাইপলাইনের ভারতের অংশের জন্য ৯১.৮৪ কোটি রুপি বিনিয়োগ করেছে এনআরএল। এছাড়া পাইপলাইনের বাংলাদেশ অংশের জন্য ২৮৫.২৪ কোটি রুপি ভারত সরকার অনুদান-সহায়তা হিসাবে অর্থায়ন করছে।

আসামের বিধায়কদের একটি প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর শেষে তৈরি করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ এই পাইপলাইনের মাধ্যমে এনআরএলের কাছ থেকে গ্যাস ও তেল আমদানি করবে।

গত ২০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আসামের বিধানসভার স্পিকার বিশ্বজিৎ দাইমারি। ওই সময় শেখ হাসিনা আসামের বিধানসভার স্পিকারকে বলেন, নতুন বছরে পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু করবে বাংলাদেশ।

প্রতিনিধিদলের তৈরি করা প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন, বাংলাদেশ পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে তেল আমদানি করতে চায়... ১৩০ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিএফপিএল) প্রকল্পের লক্ষ্য ভারত থেকে বাংলাদেশে তেল পণ্য রপ্তানি করা।’

এনআরএল এবং বিপিসি ২০১৭ সালের এপ্রিলে আইবিএফপিএল পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে হাই স্পিড ডিজেল (এইচএসডি) বিক্রির একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল।

পরবর্তীতে একই বছরের অক্টোবরে এনআরএল প্রতিবেশী বাংলাদেশে গ্যাস ও তেল (ডিজেল) রপ্তানির জন্য বিপিসির সাথে আরেকটি ১৫ বছর মেয়াদের চুক্তি স্বাক্ষর করে।

এনআরএলে অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের ৬৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এছাড়া আসাম সরকার ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্ডিয়া লিমিটেডের যথাক্রমে ২৬ ও ৪.৩৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

সূত্র: পিটিআই।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি