আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২২ ও অভিবাসী সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে হংকংয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কর্তৃক বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। “থাকব ভালো, রাখব ভালো দেশ; বৈধ পথে প্রবাসী আয়, গড়ব বাংলাদেশ”-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে এদিবসটি পালন করা হয়।
হংকংয়ে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপন, রেমিট্যান্স এ্যাওয়ার্ড ও সম্মাননা প্রদান
![](https://natunjug.com/uploads/news_image/news_8538_1.jpg)
![জুম ইন](https://natunjug.com/uploads/others/ZoomIn-icon.png)
![জুম আউট](https://natunjug.com/uploads/others/ZoomOut-icon.png)
![পরে পড়ুন](https://natunjug.com/uploads/others/Read-later.png)
![প্রিন্ট](https://natunjug.com/uploads/others/Print-icon.png)
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২২ ও অভিবাসী সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে হংকংয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কর্তৃক বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। “থাকব ভালো, রাখব ভালো দেশ; বৈধ পথে প্রবাসী আয়, গড়ব বাংলাদেশ”-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে এদিবসটি পালন করা হয়।
এ উপলক্ষে রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রথমবারের মতো কনস্যুলেটের সম্মেলন কক্ষে ও হংকংয়ের স্থানীয় একটি পার্কে আলাদা ভাবে হংকং প্রবাসী বাংলাদেশীদের সম্মাননা ও রেমিট্যান্স এ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বৈধ উপায়ে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ৩ নারী কর্মীসহ ৬ জনকে রেমিট্যান্স এ্যাওয়ার্ড প্রদান ও হংকং প্রবাসী বাংলাদেশীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।
কনস্যুলেটের সম্মেলন কক্ষে কনসাল (শ্রম) জাহিদুর রহমান-এঁর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কনসাল জেনারেল মিজ্ ইসরাত আরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করে উপস্থিত সকলকে শুনানো হয়। এসময় কনস্যুলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীগন, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব হংকং’র নেতৃবৃন্দ, হংকংস্থ বিভিন্ন সংগঠন ও বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কনসাল জেনারেল মিজ্ ইসরাত আরা তাঁর বক্তব্যের শুরুতে হংকংস্থ বাংলাদেশীসহ সকল অভিবাসীদের আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২২ এর শুভেচ্ছাসহ অর্থনীতির চালিকাশক্তি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। নিরাপদ অভিবাসন, অভিবাসী কর্মীদের মর্যাদা ও অধিকার অক্ষুন্ন রাখা এবং তাদের অবদানে দেশের অর্থনীতির ভুমিকা এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষের সাথে সামঞ্জস্য রেখে অভিবাসী দিবেসের এবছরের প্রতিপাদ্য অত্যন্ত তাৎপর্য পূর্ণ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি জানান। কনসাল জেনারেল বলেন, সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও সঠিক ব্যবস্থাপনায় দেশের জনসংখ্যা আজ জনসম্পদে রূপান্তরিত হচ্ছে। আজ বিশ্বের ১৭৪ টি দেশে এক কোটি ৪০ লক্ষেরও বেশি বাংলাদেশী সুনামের সহিত কাজ করছেন। তিনি হংকং প্রবাসী বাংলাদেশীসহ সকল অভিবাসীদের দেশের উন্নয়নে ও সুনাম বৃদ্ধিতে আরো বেশি দেশপ্রেম, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করার আহবান জানান। প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথে আলোচনা সভা শেষে বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স প্রেরণের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ৩ জনকে প্রথমবারের মতো সম্মাননা ও রেমিট্যান্স এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। প্রথমবারের মতো সম্মাননা ও রেমিট্যান্স এ্যাওয়ার্ড ও রেমিট্যান্স এ্যাওয়ার্ড প্রদান করায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা কনসাল জেনারেল ও কনস্যুলেটগনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। সবেশেষে অভিবাসীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও অভিবাসী সপ্তাহের সফলতা কামনা করেন কনসাল জেনারেল মিজ্ ইসরাত আরা।
এর আগে রবিবার সকালে হংকং-এ কর্মরত বাংলাদেশীদের নিয়ে স্থানীয় একটি পার্কে দুই শতাধিক নারী কর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এবছরের দিবসটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সভায় নারী কর্মীদের উপস্থিতি ও আগ্রহ সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
মতবিনিময় সভা শেষে বৈধ উপায়ে ও সুনামের সহিত রেমিট্যান্স প্রেরণের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ৩ নারীকে প্রথমবারের মতো সম্মাননা স্মারক ও রেমিট্যান্স এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স প্রেরণ করায় কনসাল জেনারেল মিস ইসরাত আরা ও কনসাল (শ্রম) জাহিদুর রহমান সকল নারীকর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী নারী কর্মীরা তাদের অভিব্যক্ত প্রকাশ মূলক বক্তব্যে বৈধ উপায়ে হংকং আসার ও সুনামের সহিত আয় করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তাছাড়া তাদের প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা সবসময় ও সময়মতো প্রদান এবং প্রতিমাসের শেষ রবিবার তাদের সুবিধার্থে কনসাল অফিস খোলা রাখায় কনস্যুলেটকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তারা। প্রথমবারের মতো হংকং প্রবাসীদের সম্মাননা প্রদান ও নারীকর্মীদের রেমিট্যান্স এ্যাওয়ার্ড প্রদানকে সাধুবাদ জানিয়ে এরধারা অব্যাহত রাখার জন্য বিনীত অনুরোধ জানান বক্তারা। অনুষ্ঠান শেষে সকল নারী কর্মীদের আপ্যায়ন এবং চিত্তবিনোদনের আয়োজন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, হংকং-এ প্রায় ৮০০ জন নারীকর্মী সুনামের সহিত কাজ করছেন। করোনা অতিমারীর প্রভাবে প্রায় ৩ বছর রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলেও বর্তমানে হংকংয়ে নারীকর্মীদের গমনাগমন আশানুরূপ বৃদ্ধি পেয়েছে। হংকং-এ থাকা খাওয়া বাদেও ন্যূনতম অর্ধ লক্ষ টাকা আয় করছেন নারী কর্মীরা। নারী কর্মীদের মতে হংকং হলো বাংলাদেশী নারী কর্মীদের জন্য বৈধ পথে সুনামের সহিত বিপুল পরিমাণ আয় করার একটি আদর্শ জায়গা।
কনসাল (শ্রম) জাহিদুর রহমান জানান, হংকং-এর শ্রম আইন দ্বারা কর্মীদের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষা করা হয় বিধায় এজেন্সির মাধ্যমে বয়স্ক সানুষের সেবার জন্য কেয়ার গিভার সহ বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ কর্মী হংকং-এ অভিবাসী হিসেবে স্থান করে দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কনস্যুলেট।
মন্তব্য