শেরপুরে চার দিনের কন্যা শিশুকে নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় মা

শেরপুরে চার দিনের কন্যা শিশুকে নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় মা
সর্বমোট পঠিত : 199 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

এদিকে শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা পরীক্ষার্থীর মার কাছে বাচ্চা রেখে পরীক্ষা দেওয়ানোর ব্যবস্থা করছি। তার পরীক্ষা দেওয়ায় যাতে কোন সমস্যা না হয় আমরা সেদিকে খেয়াল রাখছি। এত ছোট বাচ্চা নিয়ে পরীক্ষা হলে বসা বিশাল ব্যাপার। তার মনের ইচ্ছে ছিলো বলেই সম্ভব হয়েছে। আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই।

শেরপুরে চারদিনের কন্যা শিশু নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন নারজিনা আফরিন তৃষা নামের এক মা। তিনি শেরপুর সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। তিনি মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সকালে শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে বাংলা দ্বিতীয় পত্র লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। আর শিশুকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র চত্বরে অপেক্ষা করছেন তার শ্বাশুড়ি সুলতানা মহসিনা।

তৃষার পরিবার জানায়, ২০২১ সালে ১৯ নভেম্বর শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা এলাকার মৃত রফিকুল ইসলাম আকন্দের মেয়ে নারজিনা আফরিন তৃষার বিয়ে হয় শেরপুর শহরের সজবরখিলা এলাকার মেহরাব হাসান মুনের সঙ্গে। চলতি বছরের ২ নভেম্বর শেরপুর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তৃষা। এর চারদিন পর ৬ নভেম্বর রোববার থেকে শুরু হয় চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা। তৃষা নবজাতক শিশুকে নিয়েই পরীক্ষায় অংশ নেন। গত রোববারও বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি।

দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা শেষে কথা হয় পরীক্ষার্থী তৃষার সাথে। তিনি জানান, আমি পরীক্ষা ভালোই দিচ্ছি। এখানে স্যারদের সহযোগিতা পাচ্ছি। কিন্তু অনেকক্ষণ বসে থেকে পরীক্ষা দিতে হয় বলে শারিরীক কিছু সমস্যা হয় মাঝেমধ্যেই। আমার শাশুড়ী মা পরীক্ষার সময় আমার মেয়ের দেখভাল করছেন। আমার আগ্রহ ছিলো পড়াশোনা শেষ করার। তার জন্যই পরীক্ষাটা দিতে পারছি। তা না হলে চারদিনের বাচ্চা নিয়ে পরীক্ষা দিতে আসতে পারতাম না।

তৃষার শাশুড়ী সুলতানা মহসিনা বলেন, আমার বউ মা খুবই ভালো ও মেধাবী শিক্ষার্থী। তার ইচ্ছেশক্তিও প্রচুর। তার সাহসেই আমরা সাহস পেয়েছি। আমরা তাকে সাহস দিচ্ছি সবসময়। সে যে পর্যন্ত পড়াশোনা করতে চায় আমরা তার পাশে থাকবো। পড়াশোনার বিকল্প নাই। আমার বউ মা দুইটা পরীক্ষাই খুব ভালো দিয়েছে। সে যখন পরীক্ষা দেয় তখন আমি পরীক্ষা কেন্দ্রেই তার বাচ্চা (নাতনী) নিয়ে বসে থাকি। আমাকেও কেন্দ্রে আগত অন্যান্য অভিভাবকগণ ও শিক্ষকরা সহযোগিতা করছেন। বাচ্চা মাঝেমধ্যে কান্নাকাটি করলেও মায়ের পরীক্ষায় কোন সমস্যা হচ্ছে না।

এদিকে শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা পরীক্ষার্থীর মার কাছে বাচ্চা রেখে পরীক্ষা দেওয়ানোর ব্যবস্থা করছি। তার পরীক্ষা দেওয়ায় যাতে কোন সমস্যা না হয় আমরা সেদিকে খেয়াল রাখছি। এত ছোট বাচ্চা নিয়ে পরীক্ষা হলে বসা বিশাল ব্যাপার। তার মনের ইচ্ছে ছিলো বলেই সম্ভব হয়েছে। আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি