লাঞ্ছিত শিক্ষকের হাসপাতালের বেডে শুকোজ নোটিশ 

নকলা সরকারী জালমামুদ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক লাঞ্ছিত

নকলা সরকারী জালমামুদ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক লাঞ্ছিত
সর্বমোট পঠিত : 444 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

গত ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার নকলা উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে এই শিক্ষক লাঞ্ছিত ঘটনায় নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ প্রশাসন কে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানান। 


শেরপুরের নকলা সরকারী হাজী জালমামুদ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক লাঞ্ছিত হয়েছেন। লাঞ্ছিত শিক্ষক ড. আনিসুল রহমান আকন্দ হামলাকারী শিক্ষক ও সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়লে কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার লোক দিয়ে শেরপুর পৌছে দেন। পরে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেন হামলায় আহত প্রভাষক ড. আনিসুল রহমান আকন্দ। এদিকে ড. আনিসুল রহমান আকন্দ জানান ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গত চার বছর ধরে বিভিন্ন খাতে টাকা আত্মসাত করে আসছেন। যেসব শুক্ষক হিসেব চেয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপে যাওয়ার ফলে তার অনুসারী শিক্ষকদের দিয়েই তার (ড. আনিসুল রহমান আকন্দ) ওপর হামলা করানো হয়।  
গত ২৫ শে সেপ্টেম্বর নকলা সরকারী হাজী জালমামুদ ডিগ্রি কলেজের ইংরেজী প্রভাষক ড. মোহাম্মদ আনিসুর রহমান আকন্দ, তার ওপর হামলার ঘটনায় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাব হোসেনসহ একই কলেজর প্রভাষক আলী নেওয়াজ আহমেদ ও সফিকুল ইসলাম বিরুদ্ধে নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ বরাবর লিখিত লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। 
অভিযোগকারী ইংরেজী প্রভাষক (সাংহাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি এইচ ডি ডিগ্রি প্রাপ্ত)  ডঃ আনিসুর  রহমান আকন্দ বলেন, দীর্ঘ চার বছর ধরে এ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাব হোসেন কলেজের নিয়মিত গভর্নিং কমিটি না থাকায় কোন মিটিং করেননা। শিক্ষক কাউন্সিলেরও মিটিং করেননা তিনি। কলেজের বিভিন্নখাতের টাকা তার অনুসারী কয়েকজন শিক্ষকদের নিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরী করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করে আসছেন। আমরা এর হিসেব চাওয়ায় আমাদের প্রতি তিনি (ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের দায়িত্ব পালনে নানাভাবে বাধাগ্রস্থ করছেন। এরই অংশ হিসেবে  গত ২৫ শে সেপ্টেম্বর কলেজে আসার পর আমি ২য় তলায় অনুষ্ঠিত পরীক্ষার রুমে সহকর্মীদের সাথে সাক্ষাতের সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাব হোসেন আমাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাননাশের হুমকি দেয়। যা আমি  নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছি। 
এরপর আমি ষ্টাফ রুমে বসার পর আমার সহকর্মী প্রভাষক  নেওয়াজ আহমেদ রুম থেকে টেনে হিচড়ে বের করে দেয়, এরপর আমি দুপুর ২ টা দিকে নকলা সিনেমা হল চত্বরে শেরপুর যাওয়া বাসের জন্য অপেক্ষায় দাড়িয়ে ছিলাম। এ সময় প্রভাষক আলী নেওয়াজ ও শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন এসে আমার হাতে থাকা ছাতা দিয়ে উপস্থিত সকলের সামনে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করলে আশে পাশে থাকা লোকজন উদ্ধার করে।  এরপর বেলা আড়াইটা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত আতংকিত অবস্থায় নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করি। এরপর  উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ আমাকে সি এন জি যোগে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন গত ৩ দিন যাবৎ আমি শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি আছি। 
নকলা সরকারী হাজী জালমামুদ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত  অধ্যক্ষ আলতাব হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন। তিনি আরো বলেন ইংরেজি প্রভাষক আনিসুর রহমানের ওই দিন (ঘটনার দিন) কোন ডিউটি ছিল না এবং পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন শিক্ষকদের সাথে নিয়ে হলের বাইরে আড্ডা দিয়ে পরীক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার জন্য তাকে কারন দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। ২০১২ সালে তার বিরুদ্ধে জামায়াত ইসলামীর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে এবং ওই সময় ম্যানেজিং কমিটি তাকে শোকজ করেছিলো। আহত শিক্ষককে দেখতে না গিয়ে হাসপাতালের বেডেই কারন দর্শানোর নোটিশ দেওয়াটা কি ঠিক হয়েছে ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন অসুস্থতার কথা তিনি জানেন না। যে শিক্ষক প্রকাশ্য জনসমুক্ষে হামলা করে শিক্ষক ও কলেজের মর্যদা নষ্ট করলো তাদের বিরুদ্ধ কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি-না ? এমন প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত প্রভাষক আলী নেওয়াজের স্ত্রী সাবেক মহিলা এমপি ছিলেন। এ ক্ষমতার দাপটেই অধ্যক্ষের সাথে একাত্ম হয়ে প্রভাব বিস্তার করেন।       
তবে অভিযুক্ত প্রভাষক আলী নেওয়াজ  বলেন, ঐ প্রভাষক আনিসুর রহমান আকন্দ আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা মিথ্যা, তাকে ঐ দিন চা খাওয়ার জন্য টানাটানি করেছি মাত্র।  
গত ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার নকলা উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে এই শিক্ষক লাঞ্ছিত ঘটনায় নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ প্রশাসন কে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানান। 
নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ জানান, ইতিমধ্যে তিনি কলেজের উভয় পক্ষের মধ্যে বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুতই তাদেরকে এক টেবিলে বসিয়ে মিমাংসা করা হবে। তাদের সকল দ্বন্ধ অবসান করা হবে।   

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি