কলসিন্দুরের আট নারীর ক্রীড়া নৈপূণ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার তারকা ফুটবলারের আলোয় গোটা বাংলাদেশ আলোকিত

ফুটবল কণ্যার ময়মনসিংহে বইছে আনন্দের বন্যা

সর্বমোট পঠিত : 110 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

পাহাড়ী সীমান্তবর্তী কলসিন্দুরের রত্ন আট নারীর ক্রীড়া নৈপূণ্যে দক্ষিণ এশিয়ার তারকা ফুটবলারের আলোয় আজ গোটা বাংলাদেশ আলোকিত।বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস গড়ে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন আমাদের সোনার মেয়েরা। নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জিতল বাংলাদেশ। এর ফলে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শিরোপা জিতল মেয়েরা। ময়মনসিংহের অজপাড়াগাঁয় ‘কলসিন্দুর’-এ বেড়ে ওঠা আটজন আছেন এ দলে।এই বিশাল বিজয়ে কলসিন্দুর, ধোবাউড়ার গ্রামাঞ্চলসহ গোটা ময়মনসিংহে বইছে আনন্দের বন্যা। মেয়েদের অভিভাবকরা আনন্দে আত্মহারা এবং তারাও গর্ব বোধ করছেন। এ অসাধারণ বিজয়ে অনেকে আবেগে আপ্লোত হয়েছেন।


পাহাড়ী সীমান্তবর্তী কলসিন্দুরের রত্ন আট নারীর ক্রীড়া নৈপূণ্যে দক্ষিণ এশিয়ার তারকা ফুটবলারের আলোয় আজ গোটা বাংলাদেশ আলোকিত।বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস গড়ে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন আমাদের সোনার মেয়েরা। নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জিতল বাংলাদেশ। এর ফলে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শিরোপা জিতল মেয়েরা। ময়মনসিংহের অজপাড়াগাঁয় ‘কলসিন্দুর’-এ বেড়ে ওঠা আটজন আছেন এ দলে।এই বিশাল বিজয়ে কলসিন্দুর, ধোবাউড়ার গ্রামাঞ্চলসহ গোটা ময়মনসিংহে বইছে আনন্দের বন্যা। মেয়েদের অভিভাবকরা আনন্দে আত্মহারা এবং তারাও গর্ব বোধ করছেন। এ অসাধারণ বিজয়ে অনেকে আবেগে আপ্লোত হয়েছেন।

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ শিরোপা অর্জন করে ইতিহাস সৃষ্টি করায় সারাদেশের ন্যায় ময়মনসিংহের সকল মানুষ অত্যন্ত আনন্দিত। বিশেষ করে আমরা গর্বিত কলসিন্দুরের আটজন কৃতি ফুটবলার টীমে যুক্ত ছিলেন। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃতি ফুটবলারদের সংবর্ধনা দেয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

নানা প্রতিকূলতা-প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে অবিচল লক্ষ্য, অদম্য মনোবল, প্রবল ইচ্ছা আর দৃঢ়সংকল্পকে সঙ্গী করে তাঁরা পাড়ি দিয়েছেন স্বপ্নপূরণের পথ। এ দলের মারিয়া মান্দা, সানজিদা আক্তার, শিউলি আজিম, তহুরা খাতুন, শামসুন্নহার সিনিয়র, শামসুন্নাহার জুনিয়র, সাজেদা খাতুন, মার্জিয়া আক্তারের বাড়ি ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুরে। ছাড়া ৪ গোল করা সিরাত জাহান স্বপ্নার বাড়ি রংপুরে। আঁখির বাড়ি সিরাজগঞ্জ, সাবিনা ও মাসুরার বাড়ি সাতক্ষীরা, কৃষ্ণা’র বাড়ি টাঙ্গাইল এবং মণিকা, রুপনা ও ঋতুপর্ণা’র বাড়ি রাঙামাটিতে।

সানজিদা-মারিয়া মান্ডাদের হাত ধরেই ২০১১ সালে নতুন এক গল্পের শুরু। এরপর একের পর লেখা হতে থাকে সফলতার গল্প। নারী ফুটবলে এগিয়ে যাওয়ার কারণে কলসিন্দুর গ্রামের নাম-ডাক ছড়িয়ে পড়ে দেশ-বিদেশে। গারো পাহাড়ের সীমান্তবর্তী অবহেলিত এই গ্রামে বিদ্যুৎ আসে ফুটবল কন্যাদের খ্যাতির কারণে। পাকা হয় রাস্তাঘাট। ফুটবল কন্যাদের বদৌলতে সরকারিকরণ হয়েছে কলসিন্দুর স্কুল এন্ড কলেজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মেয়েদের সংবর্ধনাসহ আর্থিক অনুদানও দিয়েছেন।

এই কিশোরীদের গল্প উচ্চ মাধ্যমিক শাখার একাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। 'দ্য আনবিটেন গার্লস' (অপরাজিত মেয়েরা) শিরোনামে পাঠ্যবইয়ে একটি বিশেষ পাঠ রাখা হয়েছে। গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা কিশোরীদের সফলতার গল্প লেখা হয়েছে এই পাঠে। সানজিদা, মারিয়া, তহুরা, শামসুন্নাহার, শিউলি আজিম, নাজমা আক্তার, মারজিয়া আক্তারদের জীবনী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও অকালে মৃত্যুবরণ করা সাবিনা খাতুনকে নিয়ে লেখা হয়েছে। এদের মাঝে সানজিদা আক্তার পুরো এশিয়ায় সপ্তম স্থান অধিকার করা, মারিয়া মান্দা অনুর্ধ্ব-১৫ অধিনায়ক এবং তহুরা খাতুন আন্তর্জাতিক সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ায় তাদের নিয়ে সচিত্র পাঠ রয়েছে।

নারী ফুটবলারদের এ সাফল্যে কলসিন্দুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও কলসিন্দুর নারী ফুটবল টিমের টিম ম্যানেজার মালা রানী সরকার বলেন, আজকের জয়ে আমরা অনেক অনেক আনন্দিত, এ জয় আমাদের মেয়ে এবং ছেলেদের জন্য আগামী দিনে বিশ্বজয়ের জন্য অনুপ্রেরণা জোগাবে।

মালা রানী সরকার বলেন‘ অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বাংলাদেশেরা মেয়েরা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ফুটবলে সেরা হয়েছে। তাদের জয়ে শুধু আমরা না, দেশের সকল জনগণ গর্বিত। এই মেয়েরা জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে একদিন বিশ্বকাপ জয় করে আনবে।’

নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে। এই দলে রয়েছেন ময়মনসিংহের কলসিন্দুর গ্রামে বেড়ে ওঠা আট জন। তারা হলেন সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্দা, শিউলি আজিম, তহুরা খাতুন, শামসুন্নহার সিনিয়র, শামসুন্নাহার জুনিয়র, সাজেদা খাতুন ও মার্জিয়া খাতুন।
তাদের জয়ে উচ্ছ্বসিত মালা রানী সরকার। কত বাধা পেরিয়ে আজ তারা চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জয় করেছেন, সেই গল্প শোনালেন তিনি।

মালা রানী বলেন, এই ফুটবল কন্যাদের তৈরি করতে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। ২০১১ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাধ্যমে তারা আলোচনায় আসে। এরপর আরও তিন বার চ্যাম্পিয়নের ধারা অব্যাহত রাখে।’

‘অজপাড়া গাঁ কলসিন্দুরের এই মেয়েদের ফুটবল খেলাকে অনেকে ভালো চোখে দেখেনি। পরিবার থেকেও তেমন একটা সহায়তা পাওয়া যায়নি। বিশেষ করে প্রাইমারি স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকে যখন তারা ভর্তি হয়, তখন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের বাধা আসে। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের মধ্যে শারীরিক নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। এ সময় তাদের ফুটবল খেলা পরিবারের সদস্যরা এবং স্থানীয় লোকজন ভালোভাবে নেয়নি।’

ফুটবল খেলতে গিয়ে নানা ধরনের কটূক্তিও শুনতে হয়েছে কলসিন্দুরের মেয়েদের। মালা রানী জানান, স্থানীয়রা মেয়েদের ফুটবল খেলায় উৎসাহ দেওয়ার পরিবর্তে বাধা দিয়ে বলতো, ফুটবল খেললে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে না। এছাড়াও নানা ধরনের কটূক্তিও করতো। এ সময় স্থানীয় শিক্ষক এবং সমাজ সচেতন মানুষদের সহায়তায় খেলোয়াড়দের পরিবার ও স্থানীয়দের বোঝানোর চেষ্টা করা হয়।

মালা রানী বলেন, সাফ চ্যাম্পিয়নে প্রথম পাঁচ মিনিটে গোল করে শামসুন্নাহার জুনিয়র। সে ছোটবেলায় মাকে হারায়। গরিব-অসহায় পরিবারে তাকে যত্ন করার কেউ ছিল না। কিন্তু ফুটবল খেলার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ ছিল শামসুন্নাহারের। আগ্রহ দেখে আমি এক বছর তার খাওয়া-দাওয়ার দায়িত্ব নিই। এভাবে নানা বাধা-বিপত্তি পেরি প্রত্যেক মেয়ে জাতীয় দলে জায়গা করে নেয়। এদিকে বিনা চিকিৎসায় ফুটবল কন্যা সাবিনার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন কলসিন্দুরের মেয়েরা। সবাই সিদ্ধান্ত নেয়, তারা আর ফুটবল খেলবে না। এরপর তাদের অনেক বোঝানো হয় এবং দেশের কথা মাথায় রেখে ফুটবল খেলায় মনোনিবেশে আগ্রহী করে তোলা হয়। এভাবেই আজকের ফুটবল কন্যারা তৈরি হয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফুটবলারের মুকুট ছিনিয়ে এনেছে।’

নারী ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম আলোচিত নাম সানজিদা আক্তার। তার আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে ময়মনসিংহের কলসিন্দুর গ্রাম, সেইসঙ্গে গোটা বাংলাদেশও। তিনি আরও বলেন, আমরা আগামীর জন্য খেলোয়াড় তৈরি করার ক্ষেত্রে ছেলে এবং মেয়ে দুটি ফরম্যাটে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। কিছুদিন আগে আমাদের কলসিন্দুর ছোটদের টিমের মেয়ে এবং ছেলেরা জাতীয় গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় (স্কুল এবং মাদ্রাসা) দুটি ফরম্যাটেই জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়নের গৌরব অর্জন করেছে।

খোলোয়াড় তহুরা খাতুনের বাবা ফিরোজ মিয়া বলেন, খেলায় মেয়েরা জিতায় আমরা অনেক খুশি। আগে আমরা মেয়েদেরকে খেলতে দিতাম না। এখন আর বাধা দেই না। এখন বুঝতেছি এরা দেশের সুনাম করছে। বাবা হিসেবে মানুষ সম্মান করে।

ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নে অংশ নেওয়া নারী খেলোয়াড় শামসুন্নাহার জুনিয়রের চাচা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বাংলাদেশ সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ধোবাউড়াবাসী আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করতে পারি নাই আমাদের মেয়েরা এভাবে সেরা হয়ে উঠবে।

মেয়েদের জয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে ফুটবল তারকা সানজিদার বাবা বলেন, বাংলাদেশ জয়লাভ করায় সানজিদার বাবা হিসেবে আমি গর্বিত। এক পর্যায়ে আবেগে আপ্লোত হয়ে পড়েন তিনি।

কলসিন্দুর মেয়েদের কোচ জুয়েল মিয়া বলেন, কলসিন্দুরের অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখতে চাই । আগামীদিনের খেলোয়াড় তৈরীতে ক্ষুদে ফুটবলারদের নিয়মিত অনুশীলন চলছে।

২০১১ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ঘোষণা হয় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট। খবরটি কানে আসে ময়মনসিংহ জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী উপজেলা ধোবাউড়া কলসিন্দুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মফিজউদ্দিনের। নিজের স্কুলের জন্য টিম তৈরিতে লেগে পড়েন তিনি। তখন সানজিদা চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্রী। যোগ দেয় স্কুলের টিমে। এরপর একে একে টিমে নাম লেখায় মারিয়া মান্দা, শিওলি আজিম। তাদের দেখে উৎসাহিত হয়ে যোগ দেয় মারজিয়া আক্তার, শামছুননাহার, তহুরা, সাজেদা, শামছুননাহার জুনিয়র। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে যাত্রা শুরু করা এই আট খেলোয়ার এখন জাতীয় দলে।

স্কুলে টিম গঠন হওয়ার পর কলসিন্দুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মফিজউদ্দিন নিজেই শুরু করেন প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিনতী রানী শীল নেন দেখভালের দায়িত্ব। ২০১২ সালে জেলায় শুরু হয় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট। প্রথমবারের মতো অংশ নেয় কলসিন্দুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। জাতীয় পর্যায়ে রানাসআপ হয় সানজিদা, মারিয়া, তহুরারা। চ্যাম্পিয়ন না হতে পারার আক্ষেপ নিয়ে ফিরে আসে তারা। শুরু করে নতুন করে প্রস্তুুতি।

কলসিন্দুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মফিজউদ্দিন জানান, শুরুটা ছিলো চ্যালেঞ্জ। গ্রামের অভিভাবকরা রক্ষণশীল। মেয়েদের ফুটবল খেলতে দেয়ার কথা শুনতেই পারতেন না। অভিভাবকদের বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করার ক্ষেত্রে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। এরপর মেয়েদের নিয়ে যখন মাঠে নামেন তখন অনেকেই ঠাট্টা মসকরা করেছে। অনুশীলনের সময় মাঠের আশপাশে থাকতো উৎসুক মানুষের ভিড়। অনেকেই আমাকে বিদ্রুপ করতো। তবে সাহায্য করতেও এগিয়ে এসেছেন অনেকে। লোকের তীর্যক মন্তব্যের জবাব মাঠে দিতে চেয়েছিলাম তিনি। মেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি স্কুল ছুটি পর ও বন্ধের দিনে মাঠে অনুশীলন করতে থাকে। একপর্যায়ে আসে সফলতা।

শিক্ষক মফিজউদ্দিনের পরিশ্রম বৃথা যায়নি। ২০১৩ সালে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ান হয় কলসিন্দুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। এরপরই স্থানীয় প্রশাসন ও ক্রীড়ামোদি ব্যক্তিদের নজরে আস সানজিদা, মারিয়ারা। অল্প করে হলেও মিলতে থাকে সুযোগ-সুবিধা।

২০১৪ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে মারিয়া মান্দা, শামসুন্নাহার। এমন সফলতা দেখে এগিয়ে আসে অন্য নারী শিক্ষার্থীরা। দিন দিন বাড়তে থাকে কলসিন্দুরের স্কুল টিমের সদস্য সংখ্যা।

কলসিন্দুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিনতী রাণী শীল জানান, শুরুতে প্রধান সমস্যা ছিলো 'লজ্জা' এই সমস্যার সমাধানে সময় লেগেছে। কিন্তু আমার পেরেছি লোকলজ্জার ভয় দূর করে খেলার পোশাকে মাঠে মেয়েদের নামাতে। এখন আমাদের গর্ব হয়। আমি একটি ইতিহাসের স্বাক্ষী হতে পেরেছি।

কলসিন্দুর মহিলা ফুটবল দলের কোচ জুয়েল মিয়া বলেন, আমরা আজ আনন্দে আত্মহারা। এ বড় একটা টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়া এটা একটা গর্বের বিষয়। আর এই দলের আট সদস্যই আমাদের এই কলসিন্দুরের। আমাদের গড়ে তুলা খেলোয়াড়টা আজ এমন সফলতা অর্জন করছে, এতে এত পরিমাণ আনন্দিত হয়েছি যা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এই স্বপ্নটাই আমরা দেখেছিলাম। এখন আমাদের স্বপ্ন বিশ্বকাপ জয়।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি