ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জেতা ফুটবলার ব্রাজিলের কিংবদন্তি রাইটব্যাক দানি আলভেস। ৩৯ বছর বয়সেও তরুণদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলে যাচ্ছেন তিনি। ২০১৬ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে য়্যুভেন্তাস, পিএসজি, সাও পাওলো ঘুরে গত মৌসুমে বন্ধু জাভির অনুরোধে ফের যোগ দিয়েছিলেন কাতালান দলটিতে। তবে সাত মাস পর ফের লা লিগার দ্বিতীয় সফল ক্লাব ছেড়ে তিনি এখন ফ্রি এজেন্ট।
বার্সেলোনা তার কিংবদন্তিদের সম্মান দেয় না : আলভেস
ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জেতা ফুটবলার ব্রাজিলের কিংবদন্তি রাইটব্যাক দানি আলভেস। ৩৯ বছর বয়সেও তরুণদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলে যাচ্ছেন তিনি। ২০১৬ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে য়্যুভেন্তাস, পিএসজি, সাও পাওলো ঘুরে গত মৌসুমে বন্ধু জাভির অনুরোধে ফের যোগ দিয়েছিলেন কাতালান দলটিতে। তবে সাত মাস পর ফের লা লিগার দ্বিতীয় সফল ক্লাব ছেড়ে তিনি এখন ফ্রি এজেন্ট।
সম্প্রতি তিনি অভিযোগের সুরে জানান, ক্লাবটি তার কিংবদন্তিদের সম্মান দেয় না।
বার্সেলোনার সঙ্গে দানি আলভেস গাঁটছড়া বাঁধেন সেই ২০০৮ সালে। লা লিগার আরেক ক্লাব সেভিয়া থেকে কাতালান জায়ান্টদের দলে যোগ দিয়ে একের পর এক শিরোপা জিতেছেন এই ব্রাজিলিয়ান। ক্লাব ফুটবলে সম্ভাব্য সব শিরোপার স্বাদ নিয়ে ২০১৬ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে তুরিনে পাড়ি জমান তিনি। ততদিনে সর্বকালের সেরা রাইটব্যাকের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন দানিবয়। এরপর ইতালি-ফ্রান্সের ক্লাবে সংক্ষিপ্ত সময়ে আরও শিরোপা জিতে ফিরে গিয়েছিলেন স্বদেশের ক্লাব সাও পাওলোতে। আশা ছিল দেশের মাটিতে খেলেই অবসরে যাবেন।
প্রথমবার যখন বার্সেলোনা ছাড়েন, তখনই ক্লাবটি নিয়ে কিছু অভিমানের কথা বলেছিলেন। ইঙ্গিতটা সেবারও ছিল ক্লাবের হর্তাকর্তাদের দিকে। বার্সেলোনায় প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলেই মনে করতেন এই ব্রাজিলিয়ান।
তবে ২০২১ সালে ফের ক্লাবটির ডাক উপেক্ষা করতে পারেননি তিনি। বন্ধু জাভি কোচ হয়ে এসে যখন ক্লাবটিকে নতুন করে সাজাচ্ছিলেন তখন ফের রাইট উইং সামলানোর জন্য সাহায্য চান প্রিয় বন্ধুর। দানির অভাব দূর করতে বার্সা কম চেষ্টা করেনি। সার্জিও রবের্তো থেকে সার্জিনিয়ো ডেস্ট, কেউই হতে পারেননি পরবর্তী দানি আলভেস। পরে মেসি যখন ক্লাব ছাড়লেন তখন তো রাইট উইং গড়ের মাঠ!
সাত মাসের যাত্রা শেষে ফের ক্লাব ছাড়তে হচ্ছে দানিবয়কে। বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ এতটুকুই ছিল এবার। বিশ্বকাপ খেলে ফুটবলকে বিদায় জানানোর অপেক্ষায় থাকা ব্রাজিলিয়ান এবার যখন ফের ক্লাব ছাড়লেন তখন বোঝা গেল, মনের সেই ক্ষত পুরোপুরি দূর হয়নি; বরং এ দফায় তা আরও বেড়েছে।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানকে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি প্রথমবার মন খারাপ করে বার্সা ছাড়িনি। খুশি মনেই ছেড়েছিলাম, যে কারণে আবার ফিরেছি। আমি পাঁচ বছর স্বপ্ন দেখেছি দ্বিতীয়বারের এই ফেরা যাতে আনন্দময় হয়। কিন্তু এবার আমার বিদায়টা যে রকম হলো, সেটা আমার পছন্দ হয়নি।
৩৯ বছর বয়সে বার্সেলোনার মতো ক্লাবে ফিরে এসে নিজের কতটুকু দেয়ার আছে, তা-ও নাকি ক্লাবকে খোলাখুলিই জানিয়েছিলেন তিনি। খুশিমনে প্রিয় ক্লাব থেকে বিদায় নিতে চাওয়া ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তির ভাষ্য: 'এখন আর আমি ২০ বছরের ছেলে নই। আমার কাছে কী চাইতে পারে, আমি কী করতে পারব–এসব পরিষ্কার করেই বলেছিলাম। কিছুই লুকাইনি। কিন্তু এই ক্লাবটা সাম্প্রতিককালে অনেক জঘন্য কাজ করেছে। যারা এই ক্লাবের হয়ে ইতিহাস গড়েছে, তাদের ওরা পাত্তা দেয় না। সম্মান দেয় না।
শুধু দানি নয়, এর আগে আরও কয়েকজন খেলোয়াড় বার্সেলোনার পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ করেছিলেন। ব্রাজিলের আরেক কিংবদন্তি রোনালদো লিমা কিংবা জাভির ঠিক আগে কোচের দায়িত্ব পালন করা রোনাল্ড কোম্যানও জানিয়েছিলেন, এই ক্লাব তার সেরা খেলোয়াড়দের সম্মান করতে জানে না।
তবে দানি সাবধানও করে দিচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে ক্লাবটির অতীত ঐতিহ্য তো ফিরবেই না; বরং আরও যে খারাপ হবে সে বিষয়ে সতর্ক করছেন তিনি।
মন্তব্য