অভিযুক্ত পলাতক

বিয়ের দিনে ছুরিকাহত সেই মাদরাসা ছাত্রীর মৃত্যু

রংপুর
সর্বমোট পঠিত : 81 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তারমিনা আক্তার ফুলতির বড় বোন তাহমিনার বিয়ে হয় মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের ছড়ান পশ্চিম বড়বালা এলাকায়। আত্মীয়তার সম্পর্কে ওই এলাকার মোনায়েম হোসেনের ছেলে শাখাওয়াত হোসেন প্রেমের প্রস্তাব দেন তারমিনাকে। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে শাখাওয়াত হোসেন তারমিনাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন।

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের দিনে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত মাদরাসাছাত্রী তারমিনা আক্তার ফুলতির (১৪) মৃত্যু হয়েছে। টানা ৪দিন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় রোববার সকালে মারা যায় সে।
এর আগে গত বুধবার প্রেম প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় ওই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে শাখাওয়াত হোসেন নামের এক যুবক। ওই যুবকের বাড়ি মিঠাপুকুরের ছড়ান বড়বালায়। সে ফুলতির বড় বোনের শ্বশুড়বাড়ির আত্নীয়তার সূত্রে পূর্বপরিচিত ছিল।
এ ঘটনা গত বুধবার বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের সাজানোগ্রাম এলাকায় ঘটে। ওই দিনের পর থেকে অভিযুক্ত শাখাওয়াত পলাতাক রয়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে মেয়ের পরিবার।
তারমিনা আক্তার ফুলতি লোহানীপাড়া দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে ওই এলাকার তোয়াব আলীর মেয়ে। বুধবার তার বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা শুনে ক্ষুদ্ধ শাখাওয়াত ওই দিন ভোরে মিঠাপুকুর থেকে বদরগঞ্জে গিয়ে ফুলতিকে ঘর থেকে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তারমিনা আক্তার ফুলতির বড় বোন তাহমিনার বিয়ে হয় মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের ছড়ান পশ্চিম বড়বালা এলাকায়। আত্মীয়তার সম্পর্কে ওই এলাকার মোনায়েম হোসেনের ছেলে শাখাওয়াত হোসেন প্রেমের প্রস্তাব দেন তারমিনাকে। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে শাখাওয়াত হোসেন তারমিনাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন।
গত বুধবার ফুলতির সঙ্গে অন্য ছেলের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। এ ঘটনা জানতে পেয়ে শাখাওয়াত হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে মোটরসাইকেলযোগে নিজ বাড়ি থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে ফুলতিদের গ্রামের বাড়িতে যান সাখাওয়াত। এসময় বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে ছিল। সাখাওয়াত ঘুমন্ত ফুলতিকে দরজার কাছে ডেকে নিয়ে ছুরি দিয়ে দুই পা, মুখ, কপাল ও পাজরে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এসময় ফুলতি চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন। সাখাওয়াতকে ধাওয়া দিলে সে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান। পরে ফুলতিকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালে তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স (ইনচার্জ) রেবেকা সুলতানা। তিনি বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে গত বুধবার ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চারদিন ধরে চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু প্রচুর রক্তক্ষরণ ও মারাত্মক জখম হওয়ায় তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রোববার সকালে তার মৃত্যু হয়।
এব্যাপারে বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় গত ২৯ জুলাই মেয়েটির মামা নূর আলম বাদী হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ওই আসামিকে গ্রেফতারে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।


মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি