অলিদের রাজা, বাদশা ও জমিদারকে দেখতে জনতার ভিড়

অলিদের রাজা, বাদশা ও জমিদারকে দেখতে জনতার ভিড়
সর্বমোট পঠিত : 376 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

শেরপুর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো: মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা চেষ্টা করছি মানুষ যাতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে গরুর হাটে আসে। একই সাথে কোন অসুস্থ গরু যাতে বাজারে ক্রয় বিক্রয় না করে এজন্য মানুষকে সচেতন করছি। আমাদের ৬টি টিম ঘুরে ঘুরে দেখে প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে কাজ করে যাচ্ছে। শেষ মূহুর্তে এসে প্রচুর সংখ্যাক কোরবানীর গরু বাজারে ওঠবে এবং দামও সহনশীল পর্যায়ে আসবে এমনটাই দাবী কর্মকর্তা ও সব মহলের।

শেরপুরের কোরবানীর পশুর হাটগুলো এখনো জমে ওঠেনি। পশুর হাটগুলোতে গরুও তেমন ওঠছে না। আবার যাও ওঠছে দাম ছাড়ছে না বিক্রেতারা। ক্রেতারা দাম কম বলছে। তবে এরই মধ্যে শেরপুরের প্রধান গরুর হাট নওহাটা পৌর গরুর হাটে রাজা, বাদশা ও জমিদার সবার দৃষ্টি কাড়ছে।

হাটে গিয়ে সরজমিনে দেখা যায়, শেরপুর পৌর এলাকার কান্দা পাড়ার শিক্ষিত যুবক অলিদ লেখা পড়ার পাশাপাশি প্রতি বছরই কোরবানীর জন্য ষাড় গরু লালন পালন করে বেশ লাভবান হয়ে আসছেন। গতবছর শেরপুরের বস নামের একটি ষাড় গরু লালন-পালন করে সবার দৃষ্টি কাড়ে। সাত লাখ টাকা দাম হাকিয়ে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি করে শেরপুরের বসকে। এতে বেশ লাভবানও হয় সে।এবারও অলিদ রাজা, বাদশা ও জমিদার নামের তিনটি ষাড় গরু লালন-পালন করে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য তৈরী করেছে। বৃহস্পতিবার শেরপুরের বৃহৎ কোরবানীর হাট নওহাটা পৌর গারুর হাটে তুলেন অলিদ। এতে সবার দৃষ্টি কাড়ে এ তিনটি ষাড় গরু। তিনটি গরুর মধ্যে জমিদার সাড়ে ছয় লাখ, বাদশা সাড়ে পাঁচ লাখ ও কালো রাজার দাম সাড়ে তিন লাখ টাকা হাকাচ্ছেন অলিদ।

খামারী অলিদ জানান, আমার তিনটি ষাড় গরুর মধ্যে ক্রেতারা জমিদারের দাম সাড়ে চার লাখ টাকা, বাদশার দাম সাড়ে তিন লাখ টাকা ও কালো রাজার দাম দুই লাখ আশি হাজার টাকা পর্যন্ত দাম করেছে। আবার অনেকেই দাম শুনে চলে যাচ্ছে। কিন্তু সঠিক দাম না পাইলে গরু বিক্রি করা সম্ভব হবেনা। কারণ গরুর লালন-পালন করার খরচ অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশী পড়েছে। এবার ভুসি, খেল এইগুলার দামও বেশি। আর আমার ষাড় গরু গুলাকে আমি পুষ্টিকর খাওয়া খায়িয়ে বড় করেছি। শেরপুরে এমন অনেক গুরু থাকলেও আমার গুলার মত সুস্থ সবল কম পাওয়া যাবো।

গরু দেখেতে আসা আমিনুল ইসলাম জানান, আমরা দেখি অলিদ প্রকৃত খাবার খাইয়ে ষাড় লালন পালন করে শুনেছি। গতবারও একটা গরু বাজারে তুলেছিলো। ভালো দামে বিক্রি করেছে। এ গরুগুলো দেখে আমাগো খুব ভালো লেগেছে।
সোহানুর রহমান সোহাগ বলেন, গরু তিনটাকে দেখে অনেক ভালো লাগলো। গরুগুলাকে দেখেই মনে হচ্ছে সুস্থ। আমার ইচ্ছে ছিলো তিনটার মধ্যে ছোটটা নিমু কিন্তু দাম করলাম দিলো না। পরবর্তী বাজারে আবার চেষ্টা করমু নেওয়ার জন্য।

এদিকে শেরপুরের কোরবানীর হাট গুলো এখনো জমে ওঠেনি। প্রধান প্রধান হাটগুলোতে কোরবানীর গরু আমদানী হচ্ছে কম। আবার যাও বাজারে তোলা হচ্ছে দাম চাচ্ছে বেশী এমন অভিযোগ ক্রেতাদের। এ কারণে হতাশ হয়ে গরু না ক্রয় করেই বাড়ী ফিরছে ক্রেতারা। অপর দিকে বিক্রেতাদের দাবী চড়া দামে গো খাদ্য ক্রয় করে কোরবানীর গরু লালন পালন করায় খরচ হয়েছে বেশী। এতে কমদামে গরু বিক্রি করা সম্ভব নয়। কম গরু ক্রয় বিক্রয় হওয়ায় হতাশ বাজারের ইজারাদারগণ।

বিক্রেতা আব্দুস ছাত্তার জানান, এবার অনেক কষ্ট করে বেশী দামে গো খাদ্য ক্রয় করে গরু লালন পালন করেছি। আমাগো খরচ হয়েছে অনেক বেশী। তাই সঠিক দাম না পাইলে আমাগো লোকসান অইবো।

ক্রেতা মিষ্টার আলী জানান, আমি গরুর হাটি আইলাম কিন্তু ভালো গরু উঠেনি। যাও ওঠেছে দাম অনেক বেশী চাইছে। তাই গরু কিনলাম না।
এরশাদ আলী বলেন, শেষ দিকে আইশা দাম কমেই গরু বিক্রি করবে কামরীরা। এবার মানুষের হাতে টেহা নাই। কাজেই গরুর দাম কমবেই। তাই আমরা গরু না কিনে চইলা যাইতেছি।

এদিকে শেরপুরের গরুর হাটগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। তবে রোগাক্রান্ত পশু যাতে ক্রয় বিক্রয় না হতে পারে এ জন্য ৬টি টিম গঠন করে বাজারে বাজারে অবস্থান করছে জেলা ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা।

শেরপুর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো: মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা চেষ্টা করছি মানুষ যাতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে গরুর হাটে আসে। একই সাথে কোন অসুস্থ গরু যাতে বাজারে ক্রয় বিক্রয় না করে এজন্য মানুষকে সচেতন করছি। আমাদের ৬টি টিম ঘুরে ঘুরে দেখে প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে কাজ করে যাচ্ছে। শেষ মূহুর্তে এসে প্রচুর সংখ্যাক কোরবানীর গরু বাজারে ওঠবে এবং দামও সহনশীল পর্যায়ে আসবে এমনটাই দাবী কর্মকর্তা ও সব মহলের।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি