করোনা প্রতিরোধ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি নির্দেশনা না মানার শহর সৈয়দপুর

সর্বমোট পঠিত : 136 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

এব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম হোসাইনের সাথে কার্যালয় চত্ত্বরে কথা হলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মতে সরকারি নির্দেশনা সবাইকে মানতে হবে।

মিজানুর রহমান মিলন: সারাদেশ করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও সরকারি নির্দেশনার ৬ দফা কার্যকরে কোন বালাই নেই সৈয়দপুরে। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে গত ২০ জুন থেকে দেশের সকল দোকানপাট, মার্কেট, শপিংমল, বিপনি বিতান ও মুদি দোকানসহ সবধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও সৈয়দপুরে তা মানা হচ্ছে না।

প্রশাসন থেকে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে নেই কোন পদক্ষেপ। সব মিলিয়ে সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে স্বাভাবিকভাবে চলছে সৈয়দপুরের সকল কার্যক্রম। সচেতন মহল সরকারি এসব নির্দেশনা মানাতে ব্যাপক প্রচার ও অভিযান চালানোর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের প্রতি।

সূত্র জানায়, সারাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় অফিস-আদালত, শপিংমল, হোটেল, রেস্তোরাসহ সকল প্রতিষ্ঠানের সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। গত মঙ্গলবার মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে গণমাধ্যমে অনুরোধ জানানো, সর্বক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, নো মাস্ক-নো সার্ভিস নীতি প্রয়োগ করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম বর্জন করা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জ্বর-সর্দি বা কাশি দেখা দিলে কোভিড টেস্ট করা, সকল প্রতিষ্ঠানে মাস্ক বাধ্যতামূলক, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জুমার নামাজে খুতবায় করোনা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করার জন্য বলা হয়। কিন্তু এসব স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বালাই দেখা যায়নি সৈয়দপুরে।

গতকাল বৃহস্পতিবার শহরের সর্বত্র দেখা গেছে মানুষের মুখে মাস্ক পরিধান না করার দৃশ্য। দোকান-পাট, মার্কেট, শপিংমল, অফিস পাড়ায় অধিকাংশের মুখে দেখা যায়নি কোন মাস্ক। আবার অনেকের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও তা ছিল থুতনীর নিচে।

এব্যাপারে বিভিন্নজনের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আবারও করোনা আসছে নাকি! তাদের মধ্যে একজন আনোয়ার হোসের নামে এক চাকুরিজীবি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্বাভাবিক অবস্থায় চলছি বলে নতুন করে মাস্ক পড়তে হবে তা মনে নেই। এখন থেকে মাস্ক পড়বো বলে তিনি দোকান থেকে একটি মাস্ক কিনে মুখে লাগান।

শহরের এক মুদি ব্যবসায়ী হায়দার। তার মুখে মাস্ক নেই কেন জানতে চাইলে সে কোন উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকেন। তার মতো শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শপিংমল,বিপনি বিতানসহ সকল দোকান মালিক -কর্মচারি এবং ক্রেতাদের মুখে ছিলনা কোন মাস্ক। তবে অনেকেই বলেছেন আগে মাস্ক বাধ্যতামূলক মুখে লাগাতে হবে এমন বিষয়ে প্রচার করা হতো। কিন্তু এবার তা করা হয়নি বলে মাস্ক পরিধান করেনি কেউ। তবে এখন থেকে তারা নিয়মিত মাস্ক পরিধান করবেন বলে জানান।

এদিকে সরকারিভাবে নির্দেশনা জারি হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে তা প্রচারে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে সচেতন মহলের অভিযোগ।

নাগরিক কমিটির নেতা রুহুল আলম মাস্টার বলেন, করোনা ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকারি নির্দেশনা সবাইকে মানতে হবে। তবে এ বিষয়ে প্রশাসনকে ব্যাপক প্রচারণার উদ্যোগ নিতে হবে ।

এদিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে গত ২০ জুন থেকে দেশের সব দোকানপাট, মার্কেট, শপিংমল, বিপনি বিতান ও মুদি দোকানসহ সবধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে সরকারি নির্দেশনা এখনও কার্যকর হয়নি সৈয়দপুরে। প্রথম কয়দিন নির্দিষ্ট সময়ে দোকানপাট বন্ধ হলেও এখন আর তা হচ্ছে না। সরকারিভাবে নেই কোন প্রচারণা এবং অভিযান। ফলে নিয়ম না মানার নিয়মে পরিণত হয়েছে সৈয়দপুর। গত বুধবার রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রতিষ্ঠান খুলে রাখার ওইসব দৃশ্য দেখা গেছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারেও দেখা গেছে নিয়ম না মানার দৃশ্য।

এব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, করোনা মহামারির সময় ব্যাপক প্রচারনা থাকায় আমারা জানতে পেরেছিলাম সব নিয়ম কানুন। কিন্তু এবার তেমন প্রচারণা না থাকায় কোন নিয়মই মানা হচ্ছে না।

এব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম হোসাইনের সাথে কার্যালয় চত্ত্বরে কথা হলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মতে সরকারি নির্দেশনা সবাইকে মানতে হবে।

এজন্য উপজেলার সকল দপ্তর ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভাসহ সকলকে নির্দেশনার বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। কেউ যদি এসব না মানে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে যারা নির্দেশনা মানছেন না, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি