বিয়েবাড়িতে আসা ২ যুবকের মাথা ন্যাড়ার পর লাগানো হলো আলকাতরা

সর্বমোট পঠিত : 385 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

এ ঘটনার বিয়য়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম জানান, এ বিষয়ে তাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিয়েবাড়িতে তরুণীর সঙ্গে কথা বলায় দুই যুবককে মাথা ন্যাড়া করে আলকাতরা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরমহিউদ্দিন গ্রামের আবাসনে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সায়েম গাজীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে।

ওই দুই যুবক গলাচিপার বিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলা গ্রামের ইউসুফ হাওলাদারের ছেলে তুহিন (১৭) ও ওই এলাকার লিটন গাজীর ছেলে কালু গাজী (২০)। এছাড়া অভিযুক্ত আবু সায়েম গাজী চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ৮ নম্বর ইউপি সদস্য।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলা গ্রামের অহিদুল মৃধার সঙ্গে চরআগস্তির নূরু সরদারের মেয়ে মুক্তার বিবাহ অনুষ্ঠান ছিল। চরমহিউদ্দিন আবাসনে বিবাহের খাবারের আয়োজন করা হয়। ওই বিয়েবাড়িতে যায় ওই দুই যুবক তুহিন ও কালু গাজী।

দুপুরে খাবারের পরে পার্শ্ববর্তী গ্রামের মন্টু প্যাদার মেয়ে রুপার সঙ্গে কথা বলেন তুহিন ও কালু। বিয়েবাড়ির লোকজনের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের ভাই সাইদুল ইসলাম ও স্থানীয় লোকজন দুই যুবককে ধরে নিয়ে যায় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সায়েম গাজীর অস্থায়ী কার্যালয়ে।

পরে তাদের জিজ্ঞাসা শেষে জনসম্মুখে ইউপি সদস্য সায়েম গাজীর নির্দেশে মো. তুহিন কালুর মাথা ন্যাড়া করে আলকাতরা লাগিয়ে গ্রামছাড়া করেন। লোকলজ্জার ভয়ে পালিয়ে ছিলেন দুই যুবক। পরে বুধবার বনের মধ্যে ‘আত্মহত্যা’র হাত থেকে তাদের বাঁচায় পরিবার।

ভুক্তভোগী ২ যুবক বলেন, ‘পূর্ব থেকে রুপার সঙ্গে পরিচিতি থাকায় কথা বলেছিলাম। এ ঘটনা দেখে মেয়ের বড় ভাইসহ আরও লোকজন ধরে নিয়ে মেম্বার সায়েম গাজীর কাছে নিয়ে যায় এবং তিনি আমাদের মারধর করে মাথার চুল কামিয়ে আলকাতরা লাগিয়ে গ্রামছাড়া করেন। লোকলজ্জার ভয়ে আমরা পালিয়ে থাকি। আমরা সমাজে কীভাবে বাঁচব?’

ভুক্তভোগী কালুর বাবা লিটন গাজী বলেন, ‘আমার ছেলে এমন কী অপরাধ করেছে? যার কারণে মাথা কামিয়ে আলকাতরা দিয়েছে। যদি অপরাধ করে থাকে তার জন্য দেশে প্রচলিত আইনকানুন আছে। তবে এটা কোন ধরনের বিচার? মাথা কামিয়ে আলকাতরা দিয়ে গ্রামছাড়া করল। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

মেয়ের ভাই মো. সাইদুল বলেন, ‘ওই যুবকরা আমাদের মোবাইলে বিভিন্ন সময়ে বিরক্ত করতো, বিয়েবাড়িতে ছেলেদের পেয়ে আমরা মেম্বার সায়েম গাজীর কাছে নিয়ে গেলে বিচার সালিশির মাধ্যমে সেলুনের মেশিন দিয়ে তাদের মাথা কামিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়। তবে আলকাতরা কে বা কারা লাগিয়েছে আমার জানা নেই।’

অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবু সায়েম মুঠোফোনে বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো সালিশ বৈঠক হয়নি। আমি কারও মাথা ন্যাড়া করে দেয়নি। আর যদি এমনটি হয়ে থাকে তবে তার ভিডিও ফুটেজ কোথায়?’

এ ঘটনার বিয়য়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম জানান, এ বিষয়ে তাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি