সিলেট শহরে ঢুকছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

সর্বমোট পঠিত : 106 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

সর্বত্র পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ছে জনদুর্ভোগ। বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও সিলেট নগরীর কয়েকটি এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। সিলেটের ১৩ উপজেলার মধ্যে কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি হয়েছে। অধিকাংশ গ্রামীণ রাস্তাঘাট এখন পানির নিচে। বাড়িঘরেও প্রবেশ করেছে পানি।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। মঙ্গলবারও পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রবেশ করছে শহর ও গ্রামে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যে ডুবে গেছে সিলেটের সবকটি হাওর। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিভিন্ন স্থানে তীর বেয়ে প্রবেশ করছে।

সিলেট সুরমা নদীর পানি ১২৯ ও কানাইঘাট সুরমার পানি ১৪৩ এবং কুশিয়ার নদীর পানি এখন ১৫০ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা।

সর্বত্র পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ছে জনদুর্ভোগ। বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও সিলেট নগরীর কয়েকটি এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। সিলেটের ১৩ উপজেলার মধ্যে কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি হয়েছে। অধিকাংশ গ্রামীণ রাস্তাঘাট এখন পানির নিচে। বাড়িঘরেও প্রবেশ করেছে পানি।

ফলে মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি গো-খাদ্যের সংকটও দেখা দিচ্ছে। এর পরের স্থানে রয়েছে সিলেট সদর। প্রত্যেক উপজেলায়ই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৩০ টন চাল বরাদ্দ ও ১ হাজার ১০টি শুকনো খাবারের প্যাকেট বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম।

জানিয়েছেন, পাহাড়ি ঢলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীসহ বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নদীর তীর উপচে একের পর এক এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জেলা শহরের সঙ্গে গোয়াইনঘাট, কানাইঘাটসহ কয়েকটি উপজেলার সংযোগ স্থাপনকারী সড়কগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কেও যান চলাচল বিঘ্ন ঘটছে।

মঙ্গলবার দুপুর সিলেট থেকে গোবিন্দগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে মাঝপথ থেকে গাড়ি নিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে অনেক সিএনজি অটোরিকশাচালককে। চাতল এলাকার চালক শায়েখ আহমদ জানান, প্রধান সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ছোট যানবাহন চলাচল সম্ভব হচ্ছে না।

সিলেট সদরের জালালাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুল্লা ইসহাক। একইভাবে সীমান্তবর্তী ৪টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকলাখ মানুষও দুর্ভোগে রয়েছেন।

নগরীর চালিবন্দরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাশ্মশান ঘাট তলিয়ে গেছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে কেউ মারা গেলে শবদাহের জন্য চালিবন্দরের বদলে মেজরটিলার দেবপুরস্থ শ্মশানঘাটে নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর চালিবন্দরের শ্রী শ্রী শ্মশান সংস্কার ও সংরক্ষণ কমিটি, সিলেটের সভাপতি অ্যাডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক দিবাকর ধর রাম সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।

যৌথ বিবৃতিতে তারা সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত দেবপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শবদাহ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

অ্যাডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য বলেন, বন্যায় চালিবন্দর মহাশ্মশানের চুলাসহ সবকিছু তলিয়ে গেছে। তাই শবদাহের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, বন্যা দুর্গতদের পাশে সরকার রয়েছে। সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় যারা বন্যাকবলিত তাদের সহায়তা করা হচ্ছে। চালসহ শুকনো খাবার তাদের দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দলীয় নেতাকর্মীদের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, সরকার দুর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ বরাদ দিচ্ছে না। সিলেটের মানুষ দুর্ভোগে আছে।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি