নির্ধারিত দরেও এলপিজি পান না গ্রাহকেরা

এলপিজি
সর্বমোট পঠিত : 63 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

রান্নার কাজে বেশ জনপ্রিয় এলপি (তরল পেট্রোলিয়াম) গ্যাস। বেসরকারি কোম্পানির ১২ কেজির একটি সিলিন্ডারের জুলাই মাসের সরকার নির্ধারিত দাম ৮৯১ টাকা। কিন্তু দেশের কোথাও সরকার নির্ধারিত দামে গ্যাস কিনতে পারেন না গ্রাহকেরা। আজকেও পটুয়াখালীতে ১০৮০ টাকায়, লক্ষ্মীপুরে সর্বনিম্ন ১০৫০ এবং সর্বোচ্চ ১১০০ টাকায়, নাটোর ও নওগাঁতে ১০৫০ টাকায়, খুলনায় ১১শ টাকায়, ময়মনসিংহে ১০২০ টাকায় ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডার কিনতে হয়েছে গ্রাহকদের। যা আজকে ঘোষিত আগস্ট মাসের দরের চেয়েও বেশি। আগস্ট মাসের জন্য সরকার নির্ধারিত দর বেড়ে হয়েছে ৯৯৩ টাকা।


রান্নার কাজে বেশ জনপ্রিয় এলপি (তরল পেট্রোলিয়াম) গ্যাস। বেসরকারি কোম্পানির ১২ কেজির একটি সিলিন্ডারের জুলাই মাসের সরকার নির্ধারিত দাম ৮৯১ টাকা। কিন্তু দেশের কোথাও সরকার নির্ধারিত দামে গ্যাস কিনতে পারেন না গ্রাহকেরা। আজকেও পটুয়াখালীতে ১০৮০ টাকায়, লক্ষ্মীপুরে সর্বনিম্ন ১০৫০ এবং সর্বোচ্চ ১১০০ টাকায়, নাটোর ও নওগাঁতে ১০৫০ টাকায়, খুলনায় ১১শ টাকায়, ময়মনসিংহে ১০২০ টাকায় ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডার কিনতে হয়েছে গ্রাহকদের। যা আজকে ঘোষিত আগস্ট মাসের দরের চেয়েও বেশি। আগস্ট মাসের জন্য সরকার নির্ধারিত দর বেড়ে হয়েছে ৯৯৩ টাকা।

শুরু থেকেই এলপিজির দাম নিয়ে দশক আগেও অনেক বেশি দামে সিলিন্ডার গ্যাস কিনতে হতো গ্রহাকদের। পরবর্তীতে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত ও সহযোগিতায় এ খাতের বাজার সম্প্রসারিত হয়। অনেক কোম্পানি এলপিজির আমদানি ও সরবারেহর সাথে জড়িত হয়। বিনিয়োগ হয় শত শত কোটি টাকা। দামও পড়তে শুরু করে। কিন্তু এরপরও দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে থেকে যায়। গ্রাহকেরা অভিযোগ করেন যে ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছে মতো দাম নির্ধারণ করেন। এ খাতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ জরুরি। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পরবর্তীতে আদালতের আদেশে জ্বালানির দর নিয়ন্ত্রণ সংস্থা এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গত ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো সারা দেশের জন্য এলপিজির একই দাম দাম বেধে দেয়।

এরপর আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে প্রতি মাসেই নতুন দর ঘোষণা করে যাচ্ছে কমিশন। কিন্তু এর কোনো প্রভাব পড়ছে না বাজারে। এই দরে না ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্ট না গ্রাহক। গ্রাহকদের অভিযোগ দাম ঘোষণা করে কি লাভ? তাদের বাজার থেকে বাড়তি দামেই গ্যাস কিনতে হচ্ছে। আর এলপিজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের পক্ষে নির্ধারিত দাম মানা সম্ভব নয়। কারণ বিইআরসির দামে গ্যাস বিক্রি করলে লোকসান দিতে হবে। যৌক্তিকভাবে দাম নির্ধারণ করা না হলে তাদের টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে যাবে।

এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার আবার নতুন দাম ঘোষিত হয়েছে। আগস্ট মাসের জন্য বেসরকারি কোম্পানির ১২ কেজির এলপি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৯৩ টাকা। পরিবহনে ব্যবহৃত এলপি গ্যাস যা অটো গ্যাস নামে পরিচিত তা প্রতি লিটারের দাম ৪৮ টাকা ৭১ পয়সা নির্ধারণ করেছে কমিশন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি মাসেও স্থানভেদে দেশ জুড়ে এক হাজার থেকে ১১শ ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ১২ কেজির সিলিন্ডার। যেখানে সরকার নির্ধারিত দাম হলো ৮৯১ টাকা। আগস্ট মাসে কমিশন প্রতি সিলিন্ডারের দাম ১০২ টাকা বাড়িয়েছে। এরপরও বিক্রেতারা বেশি দাম রাখবে না সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করবে তা দেখার বিষয়।

ক্রেতারা বলছেন, সরকারের দাম নির্ধারণ করে কোন লাভ নেই। বাজারে তো এই দামে গ্যাস মেলে না। তারা বলছেন, সরকার শুধু দাম ঘোষণা করেই দায়িত্ব শেষ করছে। মাঠে তা কার্যকর হচ্ছে কি না তা কেউ দেখছে না। এমন অভিযোগের বিষয়ে বিইআরসি বলছে, সারা দেশে তদারকি করার মতো তাদের জনবল নেই। এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে এগিয়ে আসতে হবে। গ্রাহককে সচেতন হতে হবে। অভিযোগ পেলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলপিজির খুচরা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোম্পানি যে দামে তাদের কাছে গ্যাস বিক্রি করে তাতে কমিশন যোগ করলে সরকার ঘোষিত দরে বিক্রি করা সম্ভব নয়।

এলপিজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা বার বার দাম ঘোষণার বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে আসছেন। একাধিক বৈঠক করেছেন কমিশনের সাথে। চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু তাদের মতামত রাখা হচ্ছে না।

বিইআরসি কর্তৃপক্ষ বলছে, গণশুনানি ছাড়া এলপিজি মালিকদের সংগঠন লোয়াবের বক্তব্য শোনার সুযোগ নেই। যে আদেশ দেওয়া হয়েছে তা ব্যবসায়ীদের মানতে হবে। না হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ১২ জুলাই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এক অভিযানে বাড়তি দরে এলপিজি বিক্রির কারণে একটি অটোগ্যাস ফিলিং স্টেশনকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ওদিনই ই-মেইলের মাধ্যমে বিইআরসিকে একটি চিঠি পাঠায় এলপিজি ব্যবসায়ীদের সংগঠন লোয়াব।

চিঠিতে বলা হয়, গত ১২ এপ্রিল ঘোষিত মূল্য সংশোধনের জন্য এলপি গ্যাস অপারেটরদের ১৮টি আবেদন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া এ ধরনের অভিযান বন্ধের দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।

বিইআরসি'র চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেছেন, তারা ব্যবসায়ীদের আবেদন পেয়েছেন। ৭ জুলাই শুনানির তারিখ ঠিক করলেও করোনার পরিস্থিতি বিবেচনা করে শুনানি পেছানো হয়েছে। আগামী ৫ তারিখ লকডাউন শেষ হলে দ্রুত শুনানির তারিখ ঘোষণা করা হবে।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি