নজরকাড়া সেই সুলতানকে আশা অনুযায়ী দাম না পেয়ে বিক্রি করেনি

৪২ মন ওজনের শেরপুরের সুলতান বিক্রি না হওয়ায় বিপাকে মালিক রুহুল

নজরকাড়া সেই ৪২ মন ওজনের শেরপুরের সুলতান
সর্বমোট পঠিত : 161 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

এত বড় ষাঁড়টিকে নিয়ে এখন কী করবেন, এ নিয়েই চিন্তায় রুহুল। তিনি জানান, গত বছর করোনার কারণে সুলতানকে বাজারে তুলতে পারেননি। খামারে এসেই অনেকে দরদাম করেছে। তখন ২৭ মণ ওজনের সুলতানের সর্বোচ্চ দাম বলা হয়েছিল ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন ১৫ লাখ। সে কারণে বিক্রি করেননি।

কোরবানির ঈদে আবারও বিক্রির চেষ্টা করা হয়েছিল শেরপুরের জনপ্রিয় সুলতানকে। তবে এবারও বিক্রি না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সুলতানের মালিক রুহুল আমীন।
গত বছর থেকেই আলোচিত সুলতানের আশা অনুযায়ী দাম না পেয়ে একে বিক্রি করেননি রুহুল। অপেক্ষা করেছেন এবারের ঈদের।
সুলতানের মালিক রুহুল আমিন নালিতাবাড়ী উপজেলার রানীগাঁও এলাকার গরুর খামারি। দুটি অস্ট্রেলিয়ান গাভি দিয়ে তিনি শুরু করেন মিনি খামার। সাড়ে তিন বছর আগে একটি গাভি বাছুরের জন্ম দেয়। ধীরে ধীরে সেই বাছুর বড় হয়।

নজরকাড়া সেই বাছুরের নাম আদর করে রাখেন শেরপুরের সুলতান।

প্রায় ১ হাজার ৭০০ কেজি ওজনের সুলতানকে বিক্রির জন্য ১৬ জুলাই ঢাকায় নেন রুহুল। আফতাবনগর হাটে উঠিয়েও হতাশা নিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে।
হাটে সুলতানের দাম হাঁকানো হয়েছিল ২০ লাখ টাকা। সেই দাম তো দূরের কথা, লালনপালনের ব্যয়ের সমপরিমাণ দামও ওঠেনি এই ষাঁড়ের।

এত বড় ষাঁড়টিকে নিয়ে এখন কী করবেন, এ নিয়েই চিন্তায় রুহুল। তিনি জানান, গত বছর করোনার কারণে সুলতানকে বাজারে তুলতে পারেননি। খামারে এসেই অনেকে দরদাম করেছে। তখন ২৭ মণ ওজনের সুলতানের সর্বোচ্চ দাম বলা হয়েছিল ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন ১৫ লাখ। সে কারণে বিক্রি করেননি।

কিন্তু তখনও হতাশ হননি রুহুল। আশায় বুক বেঁধে আরও এক বছর লালনপালন করেন সুলতানকে।
এবারের ঈদে সুলতানের দাম হাঁকেন ২০ লাখ টাকা। আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় সিদ্ধান্ত নেন ঢাকায় নেয়ার। অনেক তদবির করে রাজধানীর আফতাবনগর হাটে জায়গা মেলে ষাঁড়টির।

১৬ জুলাই সুলতানকে ঢাকার হাটে তোলা হয়। ২১ জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করেন রুহুল ও তার সঙ্গীরা। প্রথম দিকে একজন সাড়ে ১০ লাখ টাকা দাম বললেও পরে রুহুলের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেননি ওই ব্যক্তি।

ঈদের আগের রাতে বা ঈদের দিন সকালে ন্যায্য মূল্য পাবেন এমন আশায় আফতাবনগর হাটেই ঈদ করেন রুহুল।

কিন্তু আশায় গুড়েবালি দিয়ে সুলতানের দাম নেমে আসে সাড়ে চার লাখে। হতাশ হয়ে বাড়ি ফেরেন রহুল আমীন।

রুহুল বলেন, ‘জীবনে বড় ষাঁড় বা গাভি আর পালন করমু না। চরম শিক্ষা হইছে আমার। এ পর্যন্ত সুলতানের পিছে খরচ হইছে প্রায় আট লাখ টাকা। লাভ তো দূরের কথা, খরচের টাকা উঠানিই দায়। এর ওপর এরে নতুন কইরা আবারও পালনে খরচ তো আছেই।’

স্থানীয় আলফাজ মিয়া বলেন, ‘আমাদের এলাকায় এত বড় একটা গরু হওয়ায় আমরা খুশি হয়েছিলাম। আমিও চিন্তা করেছিলাম এ রকম একটা গরু লালনপালন করব। কিন্তু সুলতানকে বিক্রি করতে না পারায় আমরা হতাশ হয়েছি। আমারও ভয় হচ্ছে, এত কষ্ট করে গরু মোটাতাজা করে দাম না পাইলে কীভাবে কী করমু।’

এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, ‘একজন খামামির জন্য এ রকম একটি বিষয় হতাশাজনক। যদিও গরু ১০ বছর পর্যন্ত লালনপালন করা যায়, তবে এসব বড় ষাঁড়ের ক্ষেত্রে ঝুঁকি থাকে।

‘তা ছাড়া আরও কিছুদিন লালনপালন করলে যে ব্যয় দাঁড়ায়, শেষ পর্যন্ত খরচ ওঠানো নিয়ে শঙ্কা থেকে যায়। এমতাবস্থায় খামামির খরচ উঠাতে বিকল্প কোনো পরিকল্পনা করা যেতে পারে।’

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি