সৈয়দপুরে নিজ বাড়িতে কাপড় ব্যবসায়ী খুন : স্ত্রী ও সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদ

এই বাড়ীর নীচতলায় হত্যার শিকার হন ব্যবসায়ী রিয়াজ(বামে) খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ (ডানে)।
সর্বমোট পঠিত : 85 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

এদিকে হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সারোআর আলমের নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসেন। এরপরেই নীলফামারী গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও রংপুরের অপরাধ তদন্ত বিভাগ'র (সিআইডি) পৃথক দল। তারা ঘটনাস্থল থেকে ব্যবসায়ী রেয়াজ হত্যার ঘটনায় বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেন।

মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর থেকে  :    নীলফামারীর সৈয়দপুরে নিজ বাড়িতে রেয়াজ উদ্দিন (৬০) নামে এক কাপড় ব্যবসায়ীকে  নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। গেল রাতের কোন এক সময় তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা অনেকের। শহরের কাজীহাট এলাকার মোল্লা রোডস্থ ওই ব্যবসায়ীর বাড়ির শয়নকক্ষে হত্যার ঘটনাটি ঘটে।

খবর পেয়ে আজ শুক্রবার সকালে সৈয়দপুর থানা পুলিশ, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এসময় পুলিশ লাশের প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী এবং ওই ব্যবসায়ীর শয়নকক্ষসহ অন্যান্য স্থানে পড়ে থানা বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করেছে। পরে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ ঘটনার বিষয়ে জানাসহ হত্যার রহস্য উদঘাটনে স্ত্রী ও তার পুত্রদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল এবং হত্যার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানায়।

নিহত রেয়াজ উদ্দিনের শহরের শহীদ ডা. শামসুল হক সড়কে জামিল গামেন্টর্স, থান কাপড়ের দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নিহতের স্ত্রী জরিনা খাতুন জানান, তাঁর স্বামী রেয়াজ উদ্দিন ডায়াবেটিস্ রোগী। বেশ কিছুদিন যাবৎ অসুস্থ। তাঁর চার পুত্র বাবার কাপড়ের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিন গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির নিচতলায় স্বামীর শয়ন কক্ষে রাত দুইটা পর্যন্ত অবস্থান করেন। পরে স্বামী রেয়াজ উদ্দিন ঘুমিয়ে পড়লে তিনিও নিচতলার পৃথক একটি কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। আর বাড়ির দ্বিতীয় ও তৃতীয়তলায় তাঁর চার ছেলে জামিল (৩৩), সেলিম (৩১), দানেশ (৩০) ও ইমরান (২৮) সহ অন্যরা ঘুমিয়েছিলেন। সকালে তিনি স্বামীর কক্ষের দরজা খোলা দেখতে পান। এসময় কক্ষে প্রবেশ করে দেখেন তার স্বামীর রক্তাক্ত লাশ বিছানায় পড়ে রয়েছে। এ সময় তাঁর চিৎকারে চার পুত্র, পুত্রবধূসহ পরিবারের অন্যান্যরা ছুঁটে আসেন।

নিহতের বড় ছেলে জামিল হোসেন জানান, তার বাবার সাথে ব্যবসায়ীক বা অন্যকোন বিষয়ে কারও সাথে  দ্বন্দ নেই। কিন্তু কেন তার বাবা হত্যার শিকার হলো এ বিষয়ে কিছু,বলতে পারেননি তিনি।  

এদিকে হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সারোআর আলমের নেতৃত্বে  থানা পুলিশের একটি দল  ঘটনাস্থলে আসেন। এরপরেই নীলফামারী গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও রংপুরের অপরাধ তদন্ত বিভাগ'র (সিআইডি) পৃথক দল। তারা ঘটনাস্থল থেকে ব্যবসায়ী রেয়াজ হত্যার ঘটনায় বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সারোআর আলম, থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল হাসনাত খান, নীলফামারী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. আখেরুজ্জামান, সিআইডির উপ-পরিদর্শক রিয়াজুল ইসলামসহ অন্যান্যরা।

পরে থানা পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নীলফামারী মর্গে প্রেরন করেন।  

সুত্র জানায়, ব্যবসায়ী রেয়াজকে ভারী কোন বস্তু দিয়ে তার মুখ ও মাথায়  আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। বাড়ির ওই কক্ষে দেওয়ালে তাঁর শরীরের রক্ত দেখা গেছে। সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল হাসনাত খান জানান পারিবারিক কলহের কারণে এ হত্যাকান্ড ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ও সন্তানদের থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি