অনলাইনে মৃত ব্যক্তির ছবি পোস্ট

মৃত ব্যক্তির ছবি পোস্ট
সর্বমোট পঠিত : 258 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

আমরা অনেকে আবেগ থেকে আমার প্রিয় মানুষকে স্মরণীয় করে রাখতে তার প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনস্বরূপ তার ছবি তুলি, সংরক্ষণ করি, ঘরে টানিয়ে রাখি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করি। প্রিয় নবী (সা.)- এমনটি করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি তিনি পবিত্র কাবাঘর থেকে মুসলিম জাতির পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর ছবি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অথচ তত্কালীন পৃথিবীতে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা তাঁর চেয়ে বেশি কারো মনে ছিল না।

আমরা প্রিয় মানুষকে বিভিন্নভাবে সম্মান জানাতে পছন্দ করি। প্রিয় মানুষটিকে, তার বিভিন্ন স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে পছন্দ করি। তা করতে গিয়ে আমরা অনেক ধরনেরই পদক্ষেপ গ্রহণ করি। তন্মধ্যে অন্যতম হলো ছবি। মানুষের ছবি সংরক্ষণ করা এখন অনেক সহজ হওয়ায় এই পদ্ধতিটিই মানুষের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

অথচ ইসলামের দৃষ্টিতে অহেতুক ছবি তোলা ও তা সংরক্ষণ করা হারাম। রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন যে (কিয়ামতের দিন) মানুষের মধ্যে সব থেকে শক্ত শাস্তি হবে তাদের, যারা ছবি তৈরি করে। (বুখারি, হাদিস : ৫৯৫০)

আমরা অনেকে আবেগ থেকে আমার প্রিয় মানুষকে স্মরণীয় করে রাখতে তার প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনস্বরূপ তার ছবি তুলি, সংরক্ষণ করি, ঘরে টানিয়ে রাখি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করি। প্রিয় নবী (সা.)- এমনটি করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি তিনি পবিত্র কাবাঘর থেকে মুসলিম জাতির পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর ছবি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অথচ তত্কালীন পৃথিবীতে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা তাঁর চেয়ে বেশি কারো মনে ছিল না।

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) একবার কাবাঘরে প্রবেশ করলেন। সেখানে তিনি ইবরাহিম (আ.) ও মরিয়ম (আ.)-এর ছবি দেখতে পেলেন। তখন তিনি বলেন, তাদের কী হলো? অথচ তারা তো শুনতে পেয়েছে, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকবে, সে ঘরে ফেরেশতামণ্ডলী প্রবেশ করেন না। এই যে ইবরাহিমের ছবি বানানো হয়েছে, (ভাগ্য নির্ধারক অবস্থায়) তিনি কেন ভাগ্য নির্ধারক তীর নিক্ষেপ করবেন! (বুখারি, হাদিস : ৩৩৫১)

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) যখন কাবাঘরে ছবিগুলো দেখতে পেলেন, তখন যে পর্যন্ত তাঁর নির্দেশে তা মিটিয়ে ফেলা না হলো, সে পর্যন্ত তিনি তাতে প্রবেশ করলেন না। আর তিনি দেখতে পেলেন, ইবরাহিম এবং ইসমাঈল (আ.)-এর হাতে ভাগ্য নির্ধারণের তীর। তখন তিনি বলেন, আল্লাহ তাদের (কুরাইশদের) ওপর লানত করুন। আল্লাহর কসম, এঁরা দুজন কখনো ভাগ্য নির্ধারক তীর নিক্ষেপ করেননি। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৫২)

প্রিয় মানুষের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের রূপরেখা কী হবে, সে ব্যাপারেও কোরআন-হাদিসে নির্দেশনা রয়েছে। অতি আবেগে এর বাইরে চলে গেলেই বিপত্তি ঘটতে পারে। যেমন ঘটেছিল নুহ (আ.)-এর গোত্রের ক্ষেত্রে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘...নুহ (আ.)-এর সমপ্রদায়ের কতিপয় নেক লোকের নাম নাসরু ছিল। তারা মারা গেলে শয়তান তাদের গোত্রের লোকদের অন্তরে এ কথা ঢেলে দিল যে তারা যেখানে বসে মাজলিস করত, সেখানে তোমরা কতিপয় মূর্তি স্থাপন করো এবং ওই সব পুণ্যবান লোকের নামেই এগুলোর নামকরণ করো। কাজেই তারা তাই করল, কিন্তু তখনো ওই সব মূর্তির পূজা করা হতো না। তবে মূর্তি স্থাপনকারী লোকগুলো মারা গেলে এবং মূর্তিগুলোর ব্যাপারে সত্যিকারের জ্ঞান বিলুপ্ত হলে লোকজন তাদের পূজা আরম্ভ করে দেয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৯২০)

নাউজুবিল্লাহ। এভাবে শয়তান মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে মানুষকে বিভ্রান্তির দিকে ঠেলে দেয়।

তা ছাড়া মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে কোনো গুনাহের কাজ করা উচিত নয়। কোনো ক্ষেত্রে তা মৃত ব্যক্তির জন্য কষ্টের হতে পারে। উমর (রা.) সূত্রে নবী (সা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তিকে তার জন্য কৃত বিলাপের বিষয়ের ওপর কবরে শাস্তি দেওয়া হয়। (বুখারি, হাদিস : ১২৯২)

তাই প্রিয় মানুষের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করতে গিয়ে তাকে বিপদে ফেলে দেওয়া কোনো বিবেকবান মানুষের কাজ হতে পারে না। আল্লাহ সবাইকে সুবুদ্ধি দান করুন।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি