‘বুধবারও জানতাম না শুক্রবার থেকে আবার শাটোডাউন দেবে। আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে শুনেছি, তখন কেবল আকদ হয়েছে আমার ভাইয়ের। আয়োজন ছিল খাবারের। কিন্তু শাটডাউন ঘোষণার পরপরই খাওয়া-দাওয়া না করেই নতুন বউ নিয়ে ঢাকা রওনা দিয়েছি। যেতে কষ্ট হবে। কিন্তু কিছু করার নেই।’
কেবিন না পেয়ে ঢাকা-বরিশাল রুটের পারাবাত-১০ লঞ্চের ছাদে নববধূকে নিয়ে বসেছেন স্বজনরা।
‘না পারলাম মাংস খেতে, না পারলাম বিয়েটা ভালোমতো করতে’
ঈদের পরদিন বিয়ের আয়োজন। সবেমাত্র আকদ হয়েছে, তখনই জানলেন শুক্রবার থেকে সারা দেশে শাটডাউন। আয়োজন ছিল খাবারের। কিন্তু শাটডাউন ঘোষণার পরপরই না খেয়েই নতুন বউ নিয়ে রওনা দিতে হয়েছে।
বিয়ের পর ঢাকায় যেতে লঞ্চের কেবিন না পাওয়ায় নতুন বউকে নিয়ে লঞ্চের ছাদেই রওনা হয়েছেন ঢাকার উদ্দেশে।
বরিশাল নদী বন্দরে নোঙর করা ঢাকা-বরিশাল রুটের ঢাকাগামী পারাবাত-১০ লঞ্চের ছাদে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই চিত্র দেখা যায়।
নববিবাহিত মো. রাসেল উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত। তার স্ত্রী সোনিয়ার বাড়িও একই ইউনিয়নে।
রাসেলের বড় বোন পারভিন জানান, রাসেল ও সোনিয়ার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ঈদুল ফিতরের পরে। কিন্তু ঈদের কিছুদিন পরেই লকডাউন হওয়ায় বিয়ের আয়োজন পেছান হয়। এরপর উভয় পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত নেয় বিয়ে হবে কোরবানির ঈদে।
তিনি আরও জানান, ঈদুল আজহার আগে ১৪ দিন শাটডাউন দেয়ায় ভেবেছিলেন ঈদের পর আর শাটডাউন দেবে না। এজন্য ঈদের পর দিন বিয়ের আয়োজন করা হয়।
পারভিন বলেন, ‘বুধবারও জানতাম না শুক্রবার থেকে আবার শাটোডাউন দেবে। আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে শুনেছি, তখন কেবল আকদ হয়েছে আমার ভাইয়ের। আয়োজন ছিল খাবারের। কিন্তু শাটডাউন ঘোষণার পরপরই খাওয়া-দাওয়া না করেই নতুন বউ নিয়ে ঢাকা রওনা দিয়েছি। যেতে কষ্ট হবে। কিন্তু কিছু করার নেই।’
রাসেল বলেন, ‘চেষ্টা করেছি লঞ্চে একটি কেবিন সংগ্রহ করার। কিন্তু পাই নাই। নতুন বউ নিয়া এভাবে খোলা আকাশের নিচে যেতে কেমন দেখায়! আর একটা দিন পরে শাটডাউন দিলে আর সমস্যা হত না। না পারলাম কোরবানির মাংস খেতে, না পারলাম বিয়েটা ভালোমত করতে।’
মন্তব্য