ভিক্ষুকদের ঈদ

শেরপুরে ভিক্ষুকদের ঈদ কাটছে যেভাবে

খোয়াড়পাড় শাপলা চত্বর জামে মসজিদের সামনে ভিক্ষা করছেন
সর্বমোট পঠিত : 135 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

দেখা মিলে শ্রীবরদী উপজেলার কুড়িকাহনীয়া ইউনিয়নের কারারপাড়া গ্রামের মৃত ফছির উদ্দিনের স্ত্রী পচাত্তর বছর বয়সী কমেলা বিবির সাথে। সে জানায় স্বামী মারা যাওয়ার পর তার একমাত্র ছেলেটিও ব্লাড ক্যান্সার হয়ে মারা যায়। ছেলের বউটিও ৫ সন্তান রেখে মারা যায়। এতিম ৫ নাতিকে নিয়ে ভিক্ষে করেই চলে তার সংসার। ঈদের দিন পান্তা ভাত খেয়েই শেরপুর শহরে আসে টাকা আর গোস্ত ওঠাতে।

শেরপুর জেলাকে ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষনা করা হলেও এখনো ভিক্ষুক মুক্ত হয়নি। ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছিলো নানা উদ্যোগ। কিন্তু কোন উদ্যোগই কাজে আসেনি। ভিক্ষুকদের দাবী তাদের দিন চলে না, তারা কি করে খাবে ? তাই তারা ভিক্ষা করছে। আমরা তুলে ধরছি এসব ভিক্ষুকদের ঈদ কাটলো কিভাবে ?

শেরপুর পৌর এলাকার মোবারকপুর কইনে পাড়ার বিধবা আমেছা বিবির ঈদ উল আজহার দিন সকাল বেলা চুলায় হাড়ি ওঠেনি। তাই সে পান্তা ভাত খেয়ে চলে আসে দশ জনের কাছে টাকা আর গোস্ত ওঠাতে। মধ্য নওহাটার নূরভানু বোতল কুড়িয়েই চলে যার জীবন। দুই দিন রোজাও রেখেছিলো। খোয়াড়পাড় শাপলা চত্বর মোড়ের এক ফলের দোকানদারের কাছ থেকে একটি আম চেয়ে নিয়ে খেয়েই তার ঈদের দিনের যাত্রা শুরু।

একই অবস্থা নওহাটার পঙ্গু হাসমত আলীর। সে প্রতিবন্ধী ভাতা পাইলেও ওই টাকায় চলে না তার সংসার। তাই সে বেরিয়ে আসে ভিক্ষে করতে। ওখানে পাওয়া যায় ঝিনাইগাতীর ঘাগড়া তেতুল তলার আরেক বৃদ্ধ প্রতিবন্ধীর। সেও জানায়, তার কষ্টের কথা। সকালে পান্তা ভাত খেয়েই এসেছে ভিক্ষা করতে। প্রতিবন্ধী ভাতা পায় এজন্য তাকে দেয়া হয়না সরকারী অন্য কোন সহায়তা। স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ ৪ জনের সংসারে উপার্জন করার কেউ নেই। তাই প্রতিবন্ধী ভাতা আর ভিক্ষের টাকায় চলে তার সংসার।

এভাবেই কথা হয় পৌর এলাকার কালিগঞ্জের বড় বিবি, কারাপাড়ার রৌশন আরা, সদর উপজেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের মুনকান্দা গ্রামের গুলেছা ও তার একমাত্র প্রতিবন্ধী কন্যার সাথে। তারা জানান তাদের কষ্টের কথা। কারোর শরীরেই নেই কোন নতুন জামা-কাপড়। খাওয়াই জুটেনা, নতুন কাপড় পাবে কোথা থেকে।

দেখা মিলে শ্রীবরদী উপজেলার কুড়িকাহনীয়া ইউনিয়নের কারারপাড়া গ্রামের মৃত ফছির উদ্দিনের স্ত্রী পচাত্তর বছর বয়সী কমেলা বিবির সাথে। সে জানায় স্বামী মারা যাওয়ার পর তার একমাত্র ছেলেটিও ব্লাড ক্যান্সার হয়ে মারা যায়। ছেলের বউটিও ৫ সন্তান রেখে মারা যায়। এতিম ৫ নাতিকে নিয়ে ভিক্ষে করেই চলে তার সংসার। ঈদের দিন পান্তা ভাত খেয়েই শেরপুর শহরে আসে টাকা আর গোস্ত ওঠাতে।


শ্রীবরদীর উপজেলার কুড়িকাহনীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরে আলমকে বিষয়টি জানালে, তিনি রাতেই খাবার ও কোরবানীর গরুর মাংশ নিয়ে হাজির হন কমেলা বিবির বাড়ীতে। এতে খুশিও হন কমেলা বিবি। 


শেরপুরের জেলা প্রশাসক মো: মোমিনুর রশীদ বলেছেন, কাউকে না খেয়ে থাকতে হবে না। যারই খাবার সংকট হবে, ৩৩৩ নাম্বারে কল করলেই খাবার হাজির হবে কলদাতার বাড়ীতে। নবাগত জেলা প্রশাসক জেলায় যোগদানের পরই ছুটে চলেছেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে।  

কিন্তু এসব বয়স্ক আর প্রতিবন্ধীরা চালাতে পারে না মোবাইল। তাদের প্রশ্ন আমরা কয়দিন কল করে খাবার পামু। সারা বছর আমাগো খাওয়াবে কে ? তাই ভিক্ষে করা ছাড়া কোন কর্মকরারও উপায় নেই এদের।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি