লিটন-মুশফিকে প্রথমদিন বাংলাদেশের

লিটন-মুশফিকে প্রথমদিন
সর্বমোট পঠিত : 276 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

বাংলাদেশ দল: সাদমান ইসলাম, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস (উইকেটকিপার), ইয়াসির আলী, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী, ইবাদত হোসেন।

সাগরিকায় লিটন–মুশফিকের কার্যকরী ব্যাটিংয়ে তৃপ্তি নিয়ে মাঠ ছাড়লো বাংলাদেশ। ৪ উইকেটে ২৫৩ রান তুলে প্রথম দিনের খেলা শেষ করল টাইগাররা। এই টেস্ট দিয়েই শুরু হয়েছে বাংলাদেশের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে যাত্রা।

পাকিস্তানের বিপক্ষে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশের হয়ে ওপেন করতে নামেন সাদমান ইসলাম ও সাইফ হাসান। প্রথম ওভারেই শাহিন আফ্রিদির মুখোমুখি সাদমান। তার ওভারটি দেখেশুনে খেলেন এই ওপেনার। তবে প্রথম ওভারেই আউট হতে পারতেন তিনি। শাহিনের প্রথম ওভারে সাদমানের ব্যাটের কানায় লেগে তালুবন্দী করেন উইকেটকিপার রিজওয়ান। কিন্তু কেউ আবেদন না করায় প্রথম ওভারেই বেঁচে যান সাদমান।

দ্বিতীয় ওভারে হাসান আলীকে চার মেরে বাংলাদেশের রানের খাতা খোলেন সাইফ। দুই ওপেনার মিলে ভালো শুরুর আভাসই দিচ্ছিলেন। কিন্তু ইনিংসের পঞ্চম ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির করা বাউন্সার সামলাতে গিয়ে আবিদ আলির হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাইফ হাসান। আউট হওয়ার আগে করেন ১৪ রান।

দলীয় ৩৩ রানে হাসান আলীর বলে এলবিডাব্লিউ হলেন সাদমান ইসলাম। পাকিস্তানের আবেদনে আউটের সিদ্ধান্তে দিলে রিভিউ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের ওপেনার। কিন্তু উইকেট বাঁচাতে পারেননি। ২৮ বলে ১৪ রান করেন সাদমান। তিনটি চার ছিল তার ইনিংসে।

৩৩ রানে ২ উইকেট হারানোর পর মুমিনুল হকে ভালো কিছুর আশায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু হাল ধরতে পারলেন না তিনি। পাকিস্তানের রিভিওতে সাজঘরে ফিরতে হল টাইগার অধিনায়ককে। ১৯ বলে মাত্র ৬ রান করেছেন অধিনায়ক। মুমিনুল হক আউট হওয়ার ৬ বল পর বিদায় নিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ফাহিম আশরাফের বলে সাজিদ খানের ক্যাচ হন এই ব্যাটসম্যান। ৩৭ বলে ২ চারে করেন ১৪ রান।

প্রথম সেশনে ৪ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে সকালের সেশনটা ভালো কাটাতে পারেনি মুমিনুলের দল। মাত্র ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে পঞ্চম উইকেটে জুটি গড়ে চাপ কাটিয়েছেন মুশফিক–লিটন। এরই মধ্যে ক্যারিয়ারের দশম টেস্ট অর্ধশতক পূর্ণ করেন লিটন। এরপরই নিজের হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুশফিক। টেস্টে মিস্টার ডিপেন্ডবলের এটি ২৪তম হাফসেঞ্চুরি।

ফিফটি ছোঁয়ার পর শাহিন আফ্রিদির বলে ব্যক্তিগত ৬৭ রানে একবার জীবন পান লিটন। এরপর ফের ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছোটান তিনি। মুশফিকের সঙ্গে তার জুটিতে আসে ১৫০-এর বেশি, যা চট্টগ্রামের মাটিতে পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি। পরে এই জুটিতে ২০০-এর বেশি রান আসে।

দারুণ ইনিংস খেলার পথে মুশফিক বাংলাদেশের মাটিতে সর্বোচ্চ টেস্ট রানের মালিক বনে গেছেন। এতদিন ৩৭ ম্যাচের ৭০ ইনিংসে ২৬২০ রান নিয়ে তালিকার শীর্ষে ছিলেন তামিম ইকবাল। মুশফিক তাকে ছাড়িয়ে গেলেন ৪৪ ম্যাচের ৭৮তম ইনিংসে। ২৫৪৫ রান নিতে তালিকার তিনে আছেন সাকিব আল হাসান।

মুশফিক-লিটনে দ্বিতীয় সেশনটাও স্বস্তিতে পার করেছে বাংলাদেশ। ৬৯ রানের জুটি গড়ে মধাহ্নভোজ থেকে ফিরে লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের দাপুটে ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় সেশনে কোন উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ দল। পাকিস্তানি বোলারদের শাসন করে দ্বিতীয় সেশন থেকে লিটন-মুশফিক তুলেন ১০২ রান। দুজনের ১২২ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়ে দ্বিতীয় সেশন শেষ করে বাংলাদেশ।

চা বিরতির পর ৬২ রানে লিটন ও ৫৫ রানে মাঠে নামেন মুশফিক। এখান থেকে শেষ সেশনে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক পূর্ণ করেন লিটন কুমার দাস। বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সে সমালোচনা তাকে ঘিরে ধরেছিল চারপাশে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টানা ব্যর্থতায় দল থেকে বাদও পড়েছেন। কিন্তু টেস্টে নিজের চেনা ছন্দেই আছেন লিটন দাস। দলের বিপদের মূহুর্তে নেমে মুশফিকের সঙ্গে বড় জুটি গড়ে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ১৯৯ বল মোকাবেলায় ১০টি চার ও এক ছক্কায় এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি।

আলোক স্বল্পতায় ৮৫ ওভারেই প্রথম দিনের খেলা শেষ হলে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন মুশফিক ও লিটন। ২২৫ বলে ১১৩ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন লিটন এবং মুশফিক (৮২*) সেঞ্চুরির প্রত্যাশায় দ্বিতীয় দিন সকালে ব্যাটিংয়ে নামবেন।  

এই ম্যাচে বাংলাদেশের ৯৮তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হলো উদীয়মান তারকা ক্রিকেটার ইয়াসির আলি রাব্বির।  এছাড়া পাকিস্তান দলেও টেস্ট ক্যাপ পেয়েছেন আব্দুল্লাহ শফিক।

বাংলাদেশ দল:

সাদমান ইসলাম, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস (উইকেটকিপার), ইয়াসির আলী, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী, ইবাদত হোসেন।

পাকিস্তান দল:

আব্দুল্লাহ শফিক, আবিদ আলী, আজহার আলী, বাবর আজম (অধিনায়ক), ফাওয়াদ আলম, মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটকিপার), ফাহিম আশরাফ, নওমান আলী, হাসান আলী, শাহীন শাহ আফ্রিদি, সাজিদ খান।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি