শুভেচ্ছা বিনিময় কালে প্রধানমন্ত্রী

এমন শাস্তি হবে আর কেউ যেন সাহস না পায়

প্রধানমন্ত্রী
সর্বমোট পঠিত : 106 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

সরকার প্রধান বলেন, ‘আর যে ঘটনা ঘটেছে-সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছিলাম। এভাবে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। যেখানে যেখানে যারাই এ ধরনের ঘটনা ঘটাবে সঙ্গে সঙ্গে তাদের খুঁজে বের করা হবে। আমরা অতীতেও করেছি, এবারও আমরা করতে পারবো। ’

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতা এবং ভক্তদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টার ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের খুঁজে বের করা হবে এবং এমন শাস্তি দিতে হবে ভবিষ্যতে যেন আর কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়।    

কুমিল্লার ঘটনার তদন্ত চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছুদিন আগে কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটেছে ইতোমধ্যে সেটিও তদন্ত হচ্ছে, খুব ব্যাপকভাবে তদন্ত হচ্ছে। অনেক তথ্য আমরা পাচ্ছি। ’
 
সরকার প্রধান বলেন, ‘আর যে ঘটনা ঘটেছে-সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছিলাম। এভাবে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। যেখানে যেখানে যারাই এ ধরনের ঘটনা ঘটাবে সঙ্গে সঙ্গে তাদের খুঁজে বের করা হবে। আমরা অতীতেও করেছি, এবারও আমরা করতে পারবো। ’

‘যথাযথ শাস্তি তাদের দিতে হবে। এমন শাস্তি দিতে হবে ভবিষ্যতে যেন আর কেউ সাহস না পায়। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন প্রযুক্তির যুগ এটা বের করা যাবে এবং সেই যেই হোক না কেন, যে ধর্মেরই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে। আমরা তা করেছি এবং করবো। ’

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়ে প্রতিবেশী দেশকেও সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্মের নামে বিভেদ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বিষয়ে-সেটা শুধু আমাদের নিজেদের দেশ না, প্রতিবেশী দেশকেও সজাগ থাকতে হবে, সচেতন থাকতে হবে। প্রতিবেশী দেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সহযোগিতা করেছে, তাদের কথা আমরা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি। ’

‘সেখানেও এমন কিছু যেন না করা হয় যার প্রভাব আমাদের দেশে এসে পড়ে। আমাদের সনাতন সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত আসে। এ ব্যাপারে তাদেরকেও সচেতন থাকতে হবে এটা আমার অনুরোধ থাকলো। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু লোক ধর্মান্ধতায় ভোগে এবং তারা সব সময় সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে চায়। এটা শুধু আমাদের দেশে না, শুধু মুসলমান হিসেবে না, সব ধর্মেই কিন্তু এই ধর্মান্ধতা আছে তারা সব সময় একটা গোলমাল, একটা কিছু করার চেষ্টা করে। আমরা যদি সবাই এক হয়ে চলি, নিশ্চয়ই তারা ক্ষতি করতে পারবে না। ’
 
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাঝেমধ্যে কিছু দুষ্টু চক্র কিছু ঘটনা ঘটিয়ে মানুষের ভেতরে এই চেতনা নষ্ট করতে চায়। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ’

তিনি বলেন, ‘যখন একটা জিনিস সুন্দরভাবে চলছে সেটাকে নষ্ট করা। বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে সেই সময় এই যাত্রাটাকে ব্যাহত করা আর সেই সঙ্গে সঙ্গে দেশের ভেতরে একটা সমস্যা করা। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে না, বিশ্বাস অর্জন করতে পারে না। রাজনীতি নেই, কোন আদর্শ নেই, আসলে তারাই এ ধরনের কাজ করে। এটা তাদের এক ধরনের দুর্বলতা। ’

সনাতন ধর্মালম্বীদের স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আপনার কখনোই নিজেদের সংখ্যালঘু মনে করবেন না। এই দেশের নাগরিক হিসেবে সম অধিকার নিয়ে আপনারা বসবাস করবেন। আপনারা সম অধিকার ভোগ করবেন। সম অধিকার নিয়ে ধর্ম পালন করবেন, উৎসব করবেন। সেটাই আমরা চাই। এটাই আমাদের বাংলাদেশের আসল নীতি। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। বাংলাদেশে সব ধর্ম-বর্ণের সবাই একসঙ্গে বসবাস করবে। এবং যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। অর্থাৎ ধর্ম যার যার উৎসব সবার এবং বাংলাদেশে কিন্তু এটা সব সময় ছিল আছে। উৎসবের সময় প্রত্যেকে এক সঙ্গে সামিল হয়ে আনন্দ উপভোগ করে। ’

তিনি বলেন, ‘আমি চাই আমাদের দেশের মানুষ সুন্দরভাবে জীবনযাপন করবে, সব ধর্মের মানুষই তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। ’

ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতা ও ভক্তরা।

ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রান্তে এই সময় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক কিশোর রঞ্জন মণ্ডল, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, সাধারণ সম্পদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন ঢাকার অধ্যক্ষ পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি