রংপুরের গঙ্গাচড়ার কুটিরঘাটে সেতু না থাকায় দুর্ভোগ, এলাকাবাসীর মানববন্ধন

রংপুরের গঙ্গাচড়ার কুটিরঘাটে সেতু না থাকায় দুর্ভোগ, এলাকাবাসীর মানববন্ধন
সর্বমোট পঠিত : 244 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

পাকুড়িয়া শরীফ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুল মতিন অভি জানান, ভরা বর্ষা মৌসুমে আমার বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা ওপার থেকে হাতে বই ও স্কুলের পোশাক নিয়ে সাঁতার কেটে নদী পার হয়। এপারে এসে অন্যের বাড়িতে গিয়ে ভেজা কাপড় পাল্টে তারপর স্কুলে আসে। কুটিরঘাটের ওই এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তিস্তা সেচ প্রকল্পের ক্যানেল সাইফুন থাকায় এবং বাসিন্দারা ক্যানেলের ডাইক দিয়ে চলাচল করায় সেখানে একটি ফুটব্রিজের সম্ভাব্যতা রয়েছে।

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় আলমবিদিতর ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘাঘট নদীর কুটিরঘাট এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের দাবি করা হলেও তা দীর্ঘদিনেও বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে কয়েক গ্রামের মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুর্ভোগ লাঘবে ওই এলাকায় সেতু নির্মাণের দাবীতে গতকাল মঙ্গলবার মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীসহ শতশত  স্থানীয় লোকজন। তারা অবিলম্বে সেতু নির্মাণের দাবি জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান ও কুটিপাড়া গ্রামের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে ঘাঘট নদী প্রবাহিত হয়েছে। যা সবার কাছে পাইকান-কুটিরঘাট নামে পরিচিত। এ ঘাট দিয়ে আলমবিদিতর ইউনিয়নের ডাঙ্গী পাইকান, প্রামানিক পাড়া, মেছনিকুন্ডা, সয়রাবাড়ী, তুলশীরহাট, ফুলবাড়ি চওয়াসহ বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। এখানে কোন স্থায়ী সেতু না থাকায় স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও জনসাধারণকে  চলাচলে পড়তে হয় চরম বিপাকে। স্থানীয়ভাবে বাঁশের একটি ছোট্ট সাঁকো তৈরি করে জীবন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয় তারা। কৃষিপণ্য ক্রয়- বিক্রয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে ওই এলাকার কৃষকরা। দোকানের ভারী মালামাল  কিংবা মোটরযান আরোহীরা বাধ্য হয়ে ১০০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে ডাংগী পাইকান  দিয়ে বেতগাড়ি ইউনিয়ন হয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে আসছে।

স্থানীয় পাইকান এলাকার বাসিন্দা তুখার আলী (৭৪) ,আব্দুস সাত্তার(৬৭) রশিদা বেগম (৩৫)সহ অনেকে জানান, শুধুমাত্র একটি সেতুর অভাবে আমরা শতশত বছর ধরে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছি। সব এলাকার উন্নয়ন হলেও আমাদের কোন উন্নয়ন হয় না। আমরা শুধু একটি সেতুর অভাবে পিছিয়ে আছি। মেম্বার, চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপি-মন্ত্রী ভোটের সময় এসে শুধু প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আনিছুর রহমান আনিছ বলেন,  সারাদেশে বর্তমান সরকারের সময়ে রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ব্যপকভাবে নির্মাণ করা হলেও এখানে কি কারণে সেতু হচ্ছে না তা খতিয়ে দেখা দরকার। তিনি অতি দ্রুত ওই এলাকায় সেতু নির্মাণের জোর দাবী জানান।

পাকুড়িয়া শরীফ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুল মতিন অভি জানান, ভরা বর্ষা মৌসুমে আমার বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা ওপার থেকে হাতে বই ও স্কুলের পোশাক নিয়ে সাঁতার কেটে নদী পার হয়। এপারে  এসে অন্যের বাড়িতে গিয়ে ভেজা কাপড় পাল্টে তারপর স্কুলে আসে।  কুটিরঘাটের ওই এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তিস্তা সেচ প্রকল্পের ক্যানেল সাইফুন থাকায় এবং বাসিন্দারা ক্যানেলের ডাইক দিয়ে চলাচল করায় সেখানে একটি ফুটব্রিজের সম্ভাব্যতা রয়েছে।

এ ব্যাপারে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন,  বিষয়টি আমাদের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। আমাদের ইরোগেশন সিস্টেম দেখভাল করার জন্য ওই এলাকায় ব্রিজের প্রয়োজনীয়তা আমরা ইতোমধ্যে  উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। যেহেতু তিস্তা সেচ পুর্নবাসন প্রকল্প চলমান রয়েছে আমরা আশাবাদী এ প্রকল্পের মাধ্যমে এখানে ব্রিজ নির্মাণ বাস্তবায়ন হবে।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি