নষ্ট হচ্ছে টিভি, ফ্রিজ ও বৈদ্যুতিক সামগ্রী

বিদ্যুৎতের লুকোচুরি খেলায় নাজেহাল রংপুর নগরবাসী

বিদ্যুৎতের লুকোচুরি খেলায় নাজেহাল রংপুর নগরবাসী
সর্বমোট পঠিত : 64 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন সমস্যা থাকলেও প্রায় এক মাস বিদ্যুতের লুকোচুরি চরমে উঠেছে। কখন বিদ্যুৎ আসে, কখন যায় তার ঠিক নেই। আবার লো-ভোল্টেজের কারণে বৈদ্যুতিক সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। গরমে ঘরে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থাকা দায়। এ পরিস্থিতে ব্যবসা-বাণিজ্যেও দেখা দিয়েছে মন্দা। মার্কেটগুলোতে ক্রেতার উপস্থিতি কম।

বিদ্যুৎতের লুকোচুরি খেলায় নাজেহাল রংপুর নগরবাসী। গত এক সপ্তাহ ধরে চলমান বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজ আর লোডশেডিংয়ে নগরীর বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে পৌছেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগরীর মানুষজন। তারা জানান, একদিকে প্রচণ্ড গরম, অন্যদিকে বিদ্যুতের এমন লুকোচুরি খেলায় তারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এতে অনেকের বাসা বাড়ির টিভি, ফ্রিজ ও বৈদ্যুতিক সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে বলেও জানান।
এদিকে শনিবার নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করেছে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো)। এমন পরিস্থিতির জন্য দু:খ প্রকাশ করেছেন।

নেসকো সূত্রে জানাগেছে, রংপুর নগরীতে বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা গড়ে প্রায় ৮৫০ মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ৬০০-৭০০ মেগাওয়াট। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট। ওই কেন্দ্র থেকে আগে দেড় শ মেগাওয়াট পেলেও এখন মিলছে ৭৬ মেগাওয়াট।

নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন সমস্যা থাকলেও প্রায় এক মাস বিদ্যুতের লুকোচুরি চরমে উঠেছে। কখন বিদ্যুৎ আসে, কখন যায় তার ঠিক নেই। আবার লো-ভোল্টেজের কারণে বৈদ্যুতিক সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। গরমে ঘরে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থাকা দায়। এ পরিস্থিতে ব্যবসা-বাণিজ্যেও দেখা দিয়েছে মন্দা। মার্কেটগুলোতে ক্রেতার উপস্থিতি কম।

নেসকো কর্মকর্তারা জানান, রংপুরে নেসকোর তিনটি ইউনিট আছে। প্রতিটি ইউনিটে দুইটি করে পাওয়ার ট্রান্সমিটার। শুক্রবার সন্ধ্যায় নেসকো-১ (বাজার ফিডার) এর একটি ট্রান্সমিটার বিকল হয়। ট্রান্সমিটার কুড়িগ্রাম থেকে আনা হচ্ছে। ৪০ টন ট্রান্সমিটারটি স্থাপন করতে সময় লাগছে। ট্রান্সমিটার মেরামত করে পুনরায় স্থাপনে কমপক্ষে সাতদিন সময় লাগবে। সাতদিনের আগে সংকট কাটছে না।

এদিকে লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ নিয়ে নেসকোর দেয়া ব্যাখ্যায় অসন্তুষ্ট রংপুর নগরবাসী। তারা বলছেন, গড়ে প্রতিদিন ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের অভাবে এমন পরিস্থিতি হতে পারে না। আগে এর চেয়ে বেশি ঘাটতি থাকলেও মানুষের দুর্ভোগ ছিল কম।
নগরীর মোতাহার কর্মাশিয়াল কমপ্লেক্্েরর ব্যবসায়ী উদয় চন্দ্র বর্মন ও  আরিফুল ইসলাম জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে বিদ্যুতের এমন লুকোচুরি খেলা। ‘দিনে ৬-৭ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার ঘটনা চলছেই। অনেক সময় বিদ্যুৎ আসার পর থাকছে একটানা এক ঘণ্টারও কম।’আবার কখনও দশ-পনের মিনিট।

রংপুর প্রেসক্লাব বিপনী বিতানের ব্যবসায়ী রোস্তম আলী সরকার বলেন, ‘লো-ভোল্টেজের কারণে কম্পিউটার-ফটো কপি মেশিন চলাতে পারছি না। সেই সাথে মেশিন নষ্টের কথাও জানান তিনি।

নগরীর কামাল কাছনা এলাকার গৃহবধু আরজানা বেগম জানান, ‘লো-ভোল্টেজে টেলিভিশন চলে না, ফ্যান ঘুরলেও বাতাস নেই। ফ্রিজ নষ্টের পথে।’

এব্যাপারে কথা হয় রংপুর অঞ্চলের নেসকোর প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকারের সাথে। তিনি বলেন, সাপ্লাই কম থাকায় লো-ভোল্টেজ হচ্ছে। আমরা বিষয়টি উচ্চ পর্যায় জানিয়েছি। একটি ট্রান্সমিটার নষ্ট হবার কারণে অন্যগুলো দিয়ে ঘাটতি পূরণের চেষ্টা হচ্ছে। এ কারণে একটু লোডশেডিং হচ্ছে। আশা করি সমস্যাগুলো দ্রুতই ঠিক হয়ে যাবে। গ্রাহকের সাময়িক অসুবিধার তিনি দু:খ প্রকাশ করেন।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি