ভুয়া ডেন্টিস্টের চিকিৎসায় জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে শিশু রাফি

জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে শিশু রাফি
সর্বমোট পঠিত : 110 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

এ বিষয়ে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘জানামতে মফিজুল নামের অভিযুক্ত এই চিকিৎসকের কোনো নিবন্ধন নেই। তাকে চেম্বার করতে দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। লিখিত অভিযোগ পেলেই চিকিৎসক পরিচয়দানকারী এই প্রতারকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সাত বছরের ছোট্ট শিশু আবদুর রাফি। দুধের দাঁত পড়ার ব্যথার চিকিৎসা করাতে গিয়েই উল্টোদিকে জীবনের মোড় নিবে তা কে জানতো! হাতুড়ে আর ভুয়া ডেন্টিস্টের নিকট ভুল চিকিৎসা নিয়ে ফুটফুটে রাফির পুরো শরীর যেন পুড়ে গেছে। শরীরজুড়ে আগুনে পোড়ার মতো দগদগে ঘা ও ফোসকার সৃষ্টি হয়েছে। এমন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে শিশুটিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- হাতুড়ে ওই চিকিৎসকের নাম মফিজুল হক। তিনি রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালী বাজারে চেম্বার খুলেছেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে এমন ভুল চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ আছে। চেম্বারের সামনের সাইনবোর্ডে লেখা চিকিৎসক। অথচ তিনি কথিত মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট।  

রামেক হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন- শিশুটির দাঁত ব্যথা কমাতে ভুল ওষুধ দেওয়া হয়েছে। ভুল ওধুষের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় শিশুর শরীরে এ অবস্থা হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত স্বাভাবিক হতে পারে। নয়তো শিশুটির শরীরের আরও ক্ষতি হতে পারে। আক্রান্ত হতে পারে কণ্ঠনালী ও চোখও।

ভুক্তভোগী শিশুর বাবা বলেন, ছেলের দাঁত তোলার পর ব্যথা শুরু হয়। এ সময় কাছের ডাক্তার হিসেবে কাটাখালী বাজারের ডেন্টিস্ট মফিজুল হকের কাছে নেওয়া হয়। তিনি দুটি ওষুধ লিখে দিলে সেগুলো খাওয়ানোর ১২ দিন পর গোটা শরীরে ক্ষত দেখা দেয়। ঠোঁটে পোড়ার মতো ক্ষত হয়। পরে অবস্থা খারাপ হলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা তো জানি না সে একজন ভুয়া ডাক্তার। জানলে তার কাছে চিকিৎসা করাতাম না। আমার ফুটফুটে ভালো ছেলের এমন অবস্থা করায় সেই ডাক্তেরের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। যেন আর কারো সন্তানের এমন পরিস্থিতি না হয়।

অভিযুক্ত হাতুড়ে ডাক্তারের খোঁজে শনিবার দুপুরে কাটাখালী বাজারে অবস্থিত তার চেম্বারে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও পাওয়া গেছে বন্ধ।   

এ বিষয়ে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘জানামতে মফিজুল নামের অভিযুক্ত এই চিকিৎসকের কোনো নিবন্ধন নেই। তাকে চেম্বার করতে দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। লিখিত অভিযোগ পেলেই চিকিৎসক পরিচয়দানকারী এই প্রতারকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি