শেরপুরে জন্মাষ্টমীর আলোচনা সভায় গোপালবাড়ী পুকুরের লীজ বাতিলের দাবী ॥

জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ তার বক্তব্য রাখছেন
সর্বমোট পঠিত : 495 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ তার বক্তব্যে বলেন, সত্যিই গোপাল জিওর মন্দিরের সামনের ডাস্টবিনগুলো অপসারণ করে অন্যত্র স্থাপন করা দরকার। এ বিষয়ে আমি পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো। গোপালবাড়ী পুকুরটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে হলেও এ পুকুরের চারদিকে ময়লা-আবর্জনা এবং ব্যবস্থাপনা খুব ভালো নয়। সেজন্য কালেক্টরেট স্কুলের শিক্ষকদের বেতনের টাকা যোগানোর জন্য এটি লীজ দেওয়া হয়েছে। এতে সমস্যা হলে লীজের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

শেরপুরে সনাতন ধর্মবলম্বীদের নানা আচারানুষ্ঠান ও প্রতিমা বিসর্জনের কাজে ব্যবহৃত গোপালবাড়ী পুকুরের লীজ বাতিলের দাবী জানানো হয়েছে। ৩০ আগষ্ট সোমবার দুপুরে শ্রীকৃষ্ণের ৫২৪৭ তম জন্মোৎসব ও জন্মাষ্টমী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় এমন দাবী জানিয়েছেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতবৃন্দরা। জেলা প্রশাসন ও হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের আয়োজনে শহরের গোপাল জিওর মন্দির প্রাঙণে অবস্থিত জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ কার্যালয়ে এ আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের সহকারি পরিচালক শামীম আহমেদ-এর সভাপতিত্ব প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নন্দ সাহার সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদে সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত দে ভানু, সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রকাশ দত্ত, সহ-সভাপতি চন্দন কুমার সাহা, অ্যাডভোকেট শক্তিপদ পাল, যাদব ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক বিনয় কুমার সাহা, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি শিশু সংগঠন মলয় মোহন বল, নাগরিক প্লাটফর্ম জনউদ্যোগ আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। এছাড়াও শ্রীকৃষ্ণের জীবনীর উপর আলোচনা করেন ইসকন-এর সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব জগন্নাথ দাস।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শহরের গোপালবাড়ী পুকুরটি সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষরা গোসল করা সহ নানা আচার অনুষ্ঠানের কাজে এর পানি ও পাড় ব্যবহার করে থাকেন। এই পুকুরে দূর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। প্রতিমা বিসর্জনের আগে পুকুরপাড়ে আরতি অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সম্প্রতি পুকুরটি জেলা প্রশাসন লীজ দেওয়ায় সেখানে মাছ চাষ করা হয়েছে। সেটির চারদিকে নেট দিয়ে ঘিেের দেওয়া হয়েছে। এতে সনাতন ধর্মবলম্বীরা নিত্যদিনের গোসল করা সহ নানা আচার পালনে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছেন। সামনে দূর্গাপূজা, সেসময় প্রতিমা বিসর্জন নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য তারা জেলা প্রশাসকের নিকট গোপালবাড়ী পুকুরটি লীজ বাতিল করা কিংবা লীজ দেওয়া হলে পূজা উদযাপন পরিষদকে দেওয়ার দাবী জানান। তারা পুকুরটি খনন, পরিচ্ছন্নকরণ এবং গোপাল জিওর মন্দিরের সামনে ডাস্টবিনগুলো অপসারণ করে অন্যত্র স্থাপনের দাবী জানান।

জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ তার বক্তব্যে বলেন, সত্যিই গোপাল জিওর মন্দিরের সামনের ডাস্টবিনগুলো অপসারণ করে অন্যত্র স্থাপন করা দরকার। এ বিষয়ে আমি পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো। গোপালবাড়ী পুকুরটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে হলেও এ পুকুরের চারদিকে ময়লা-আবর্জনা এবং ব্যবস্থাপনা খুব ভালো নয়। সেজন্য কালেক্টরেট স্কুলের শিক্ষকদের বেতনের টাকা যোগানোর জন্য এটি লীজ দেওয়া হয়েছে। এতে সমস্যা হলে লীজের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

তবে তিনি বলেন, এই পুকুরটির চারপাশে ওয়াকওয়ে করে সৌন্দর্য্যবর্ধন করে দৃষ্টিনন্দন করা যায়। এ বিষয়ে আমি পৌর মেয়রকে প্রকল্প তৈরীর কথা বলেছি। প্রয়োজনে আমি প্রকল্পটি পাশ করিয়ে আনার চেষ্টা করবো।

কমিউনিটির পক্ষ থেকে তিনি পৌর মেয়রকে পুকুরটিও চারপাশে ওয়াকওয়ে ও সৌন্দর্য্যবর্ধন প্রকল্প নেওয়ার জন্য কথা বলতে পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শ্রীশ্রী গোপালবাড়ী জিউড় মন্দির প্রাঙ্গনে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মোৎসব শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে এক বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি