শাজাহানপুরে ইউএনও'র অস্থায়ী গাড়ি চালকের রোষানলে পুড়ছে দরিদ্র মালি: বিচার চেয়ে বিক্ষোভ-মানববন্ধন

শাজাহানপুরে ইউএনও'র অস্থায়ী গাড়ি চালকের রোষানলে পুড়ছে দরিদ্র মালি: বিচার চেয়ে বিক্ষোভ-মানববন্ধন
সর্বমোট পঠিত : 18 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার সাথে কথা বললে তিনি জানান, তারা মালির পরিবার থেকে লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছেন যা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বগুড়ায় শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অস্থায়ী গাড়িচালক মামুন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে চাকরিচ্যুত করার পাশাপাশি শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে উপজেলায় মালি পদে চাকরী করা ইদ্রিসের পরিবার ও এলাকার শত শত স্থানীয় সাধারণ মানুষ। রবিবার দুপুর ১২টায় উপজেলা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে পরিষদের সামনে মহাসড়কে এই মানব-বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, শাহজাহানপুর উপজেলায় দীর্ঘ ১৯ বছর যাবত মালি পদে চাকুরীরত আছেন ইদ্রিস আলী। অভাব অনটনের সংসারে তার নেই কোন উপার্জনক্ষম ছেলে সন্তান। ৫ মেয়ের মাঝে ৩ মেয়েকে ইতিমধ্যেই বিয়ে দিয়েছেন। দরিদ্র মালিকে মানসিকভাবে চাপে ফেলতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্থায়ী গাড়িচালক হিসেবে শাহজাহানপুর উপজেলায় যোগ দেয়া নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক মামুন ইদ্রিস আলীর কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানির চেষ্টাসহ কয়েক মাস ধরে তাকে চাকরিচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন। এ বিষয়ে বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার কাছে তারা ইউএনও'র অস্থায়ী গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে তাদের উপর নেমে আসে ঘোর অন্ধকার।

এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী মালির মেয়ে শামসুন্নাহার ও কুলসুম বেগম বলেন, তাদের বাবা ইদ্রিস আলীর এই বৃদ্ধ বয়সে যাওয়ার কোন জায়গা নেই। তাদের মা বর্তমানে মৃত্যুশয্যায়। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরোক্ষ মদদে তার বাবাকে চাকরিচ্যুত করে সেই জায়গায় অস্থায়ী গাড়িচালক মামুনকে বসানোর পায়তারা চলছে। শুধু তাই নয় মাঝে সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত গাড়িচালক এই উপজেলায় যোগদান করতে আসলেও এই মামুন নিজের স্থান হারানোর ভয়ে নানা কূটচালে তাকে যোগদান করতে দেয়নি। উল্টো সেই সরকারি স্থায়ী গাড়িচালকের বিরুদ্ধেই আনেন নানা অভিযোগ। এত বছর থেকে তাদের পরিবার এই উপজেলা চত্ত্বরেই বসবাস করছেন কোনদিন তাদের সাথে কখনো কারো মনোমালিন্য হয়নি অথচ বর্তমানে তারা নিরাপত্তাহীনতার সাথে প্রতিটি দিন পার করছেন। জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেওয়ার কারণে ইতিমধ্যেই শাজাহানপুর উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ও ড্রাইভার মামুনের যোগসাজেসে এই বৃদ্ধ বয়সে আমার বাবা-মার থাকার বাড়িটিতে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার পাশাপাশি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। ঘরের মাঝে নিজেদের মালামাল কিংবা প্রয়োজনীয় সামগ্রীগুলো বের করারও সুযোগ দেয়নি তারা। একই সাথে তারা বলেন, তাদের ৩ বোনের ইতিমধ্যে বিয়ে হয়েছে কিন্তু ইদানিংকালে তাদের মা গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তারা ৫ বোন সম্প্রতি বাবার বাড়িতে এসেছিলেন সাময়িক সময়ের জন্যে অথচ তাদের বিরুদ্ধে এটি নিয়েও মিথ্যা অভিযোগ রটানো হয় যে তারা নাকি বাবার সাথেই থাকেন।

আর ভুক্তভোগী মালি ইদ্রিস আলী বলেন, এই বৃদ্ধ বয়সে তিনি নোংরা রাজনীতির শিকার হয়ে আজ অসহায় অবস্থায় দিন পার করছেন। তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করলেও তাকে দীর্ঘদিন থেকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতে দেয়া হয় না অথচ মাঝে মাঝেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয় তিনি কাজে আসেন না যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকৃতঅর্থে তার হাজিরা খাতা চাইলেও তাকে দেয়া হয়না। এছাড়াও শুধুমাত্র তাকে চাকরিচ্যুত করার লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অস্থায়ী গাড়িচালক মামুন ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীর আস্থাভাজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে যার বলি হয়ে আজ সে অসহায় স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িছাড়া। এমন পরিস্থিতিতে স্ত্রী ও মেয়েদের নিয়ে এই বৃদ্ধ বয়সে জীবন সংসারে হাবুডুবু খাওয়া দরিদ্র মালি ইদ্রিস আলী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে চাকরিতে স্ব-পদে বহাল, তার বাড়িতে দেয়া তালা খুলে দেয়াসহ উপজেলার অস্থায়ী গাড়িচালক মামুন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে মামুনকে শাহজাহানপুর উপজেলা থেকে চাকরিচ্যুত করার জোর দাবি জানান। নইলে নিরাপত্তাহীনতায় পরিবারসহ তার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন পথ থাকবে না বলে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন ইদ্রিস।

এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার সাথে কথা বললে তিনি জানান, তারা মালির পরিবার থেকে লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছেন যা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 


মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি