শেরপুরে গৃহকর্মী উদ্ধার ঘটনায় তদন্তে নতুন মোড়

সন্তানকে লুকিয়ে গৃহকর্তা–গৃহকর্ত্রীর কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা আদায়

উদ্ধার হওয়া গৃহকর্মী ইমনা আক্তার।
সর্বমোট পঠিত : 476 বার
জুম ইন জুম আউট পরে পড়ুন প্রিন্ট

পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (দক্ষিণ) পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বুধবার দুপুরে জানান, ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ইমনা নিখোঁজ হওয়ার পর তার মা বাদী হয়ে এক ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীকে আসামি করে ঢাকার একটি আদালতে মানবপাচার মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে এ মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।

তিন বছর আগে রাজধানী ঢাকা থেকে নিখোঁজ হওয়া এক গৃহকর্মীকে শেরপুরের ঝিনাইগাতী থেকে উদ্ধারের ঘটনায় তদন্তে নতুন মোড় পাচ্ছে পিবিআই। উদ্ধার হওয়া ওই গৃহকর্মীর নাম ইমনা আক্তার। মঙ্গলবার বিকেলে পিবিআই ঢাকা  মেট্রোর (দক্ষিণ) কাছে ইমনাকে হস্তান্তর করে ঝিনাইগাতী পুলিশ। ইমনার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জের যাত্রাপুর গ্রামে। সে ওই এলাকার নূরুল হকের মেয়ে।  

পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (দক্ষিণ) পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বুধবার দুপুরে জানান, ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ইমনা নিখোঁজ হওয়ার পর তার মা বাদী হয়ে এক ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীকে আসামি করে ঢাকার একটি আদালতে মানবপাচার মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে এ মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।

তদন্তের এক পর্যায়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোর্সরা আশুগঞ্জের যাত্রাপুরের স্থানীয় এলাকাবাসী, চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সঙ্গে কথা বলেন। পরবর্তীতে ইমনার ফুফুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন।  তার ভাতিজির তথ্য দিলে তাকে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানানো হয়। এক পর্যায়ে তিনি বেশ কিছু তথ্য দেন। পরে  তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জানতে পারেন ইমনা ঢাকাতেই অবস্থান করছেন। এর পরপরই ইমনা তার অবস্থান পরিবর্তন করে তার এক মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে শেরপুরের ঝিনাইগাতী চলে যায়। পরে ঝিনাইগাতী পুলিশ ইমনাকে উদ্ধার করে। সে সময় তার মামাতো ভাই সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ইমনা নিখোঁজ হওয়ার পর তার মা আসামি পক্ষের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে আপস মীমাংসা করেছেন। স্বজনদের প্ররোচনাতে ইমনা পালানোর নাটক করেছিল কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায় গৃহকর্তাকে ফাঁসিয়ে কাঙ্খিত অর্থকড়ি হাতিয়ে নিতে গৃহকর্মী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এ ধরণের ঘটনার সৃষ্টি করে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত শুরু হয়েছে। যদি ইমনার মা, বাবা বা অন্য স্বজনরা তদন্তে অপরাধী প্রমাণিত হয় তবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

যারা বাড়িতে কাজের লোক রাখেন তাদের জ্ঞাতার্থে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গৃহ পরিচারিকার পুরো জীবন বৃত্তান্ত জেনে তাকে কাজে রাখবেন।

মামলার আসামি ও ঢাকার শাহজাহানপুরের উত্তরা ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার সাইদুর রহমান চয়ন বলেন, ইমনা তার দূরসম্পর্কের আত্মীয়। ২০১৭ সালের মার্চে রামপুরা বনশ্রীর বাড়িতে তাকে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়ে আসি। এক পর্যায়ে ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাড়ির কাউকে না জানিয়ে উধাও হয় ইমনা। এর পরপরই খিলগাঁও থানায় একটি জিডি দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ইমনার মা বাদী হয়ে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে আসামি করে মানবপাচার মামলা দায়ের করে। এরপর হাইকোর্ট থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে আমরা আগাম জামিন নেই।

তিনি আরো বলেন, ইমনা নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার স্বজনরা আমাকে আরো বেশ কিছু মামলায় আসামি করা হবে বলে হুমকি ধামকি দেয়। এক পর্যায়ে তারা বিষয়টি মীমাংসা করার কথা বলে আমার কাছ থেকে ১০-১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে বিপুল অংকের ক্ষতির শিকার হয়েছি।     

মেয়েটি পালিয়ে যাওয়ার পেছনে যদি কারো ইন্ধন থেকে থাকে তাহলে এই বিষয়ে তদন্তের দাবি জানান তিনি।

মন্তব্য

আরও দেখুন

নতুন যুগ টিভি